বান্দরবানে অন্তঃসত্ত্বাকে মদপান করিয়ে শ্মশানঘাটে নিয়ে গণধর্ষণ!

বৈশাখী মেলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বান্দরবানের লামা উপজেলায় মদপান করিয়ে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং কিছুদিন আগে তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যান বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। তবে ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে নূর হোসেন নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বৈশাখী মেলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে উপজেলার অংহারীপাড়ায় নিয়ে যায় তাকে। পরে বেলা আড়াইটার দিকে অংহারিপাড়ায় নিয়ে থোয়াই সাচিং মারমার ঘরে বসে পাঁচজন মিলে জোর করে মদপান করায় ওই নারীকে। পরে ওই এলাকার শ্মশানঘাটে (কবরসংলগ্ন) নিয়ে যায় তাকে। সেখানে বদুঝিরি এলাকার নূর হোসেন, বড় ছনখোলা এলাকার নূর মোহাম্মদ ও কুমারী এলাকার মো. রুবেলসহ পাঁচজন জোর করে মদ খাইয়ে ধর্ষণ করে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে পাশের এলাকার লোকজন এই নারীকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পায়। পরে ওই নারীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কামাল উদ্দিন ও তার ছেলে কাফি উদ্দিন ওই নারীকে বিচারের নামে মারধর করেন।

পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য ধর্ষকদের পক্ষ অবলম্বন করেন তিন জনপ্রতিনিধি। এরা হলেন ৮নং ইউপি সদস্য মো. সহিদুজ্জামান, ৭নং ওয়ার্ডের কামাল উদ্দিন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য আনাই মারমা। পরে ওই নারীকে উপজেলার ইয়াংছা বাজারে নিয়ে প্রকাশ্যে বিচারে বসেন।

এ ব্যাপারে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৮নং ইউপি সদস্য মো.সহিদুজ্জামান বলেন, আমরা ঘটনার পর কোনো বিচার করিনি। মেয়েটিকে তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে শুনলাম তাকে রাতে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।

ওই নারী বলেন, মেম্বাররা আমার কোনো কথা না শুনে সাদা কাগজে টিপসই নিয়ে যান। আমাকে বলেন, যা হয়েছে তা ভুলে যাওয়ার জন্য এবং কোথাও কোনো অভিযোগ না করার জন্য।

ভুক্তভোগী ওই নারী আরও বলেন, তারা নূর হোসেন, নূর মোহাম্মদ ও রুবেলকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। পরে আমি আমার মায়ের কাছে চলে আসি। ছয় বছর বয়সী এক ছেলে আছে আমার।

এ ব্যাপারে মারধরের ও বিচারের ঘটনায় অভিযুক্ত ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কামাল উদ্দিনের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে লামা থানার ওসি অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, ভিকটিম ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকারের পাশাপাশি মামলা করতে চাচ্ছে না। তবে ভিকটিম ও অভিযুক্ত নূর হোসেনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। ভিকটিম অভিযোগ করার সঙ্গে সঙ্গে মামলা নেয়া হবে।

এদিকে ধর্ষণের শিকার নারীর মা তার মেয়ের ধর্ষণের ঘটনার বিচার দাবি করেন।