‘বালিশ কাণ্ডে’ রূপপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রত্যাহার

সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আওতাধীন গ্রিন সিটি প্রকল্পের আসবাবপত্র কেনা ও ফ্লাটে ওঠানোয় অনিয়মের ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বুধবার (২২ মে) গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া এ বিষয়ে তদন্তে গত রোববার দুটি কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

ওই দিন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদফতর থেকে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পৃথক এ কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সব প্রকার বিল বন্ধ রাখার জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মিত গ্রিনসিটিতে আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রয়ে লাগামছাড়া দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়েছে। একটি বালিশের পেছনে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৬ হাজার ৭১৭ টাকা। এর মধ্যে এর দাম বাবদ ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা আর সেই বালিশ নিচ থেকে ফ্ল্যাটে ওঠাতে খরচ ৭৬০ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু আসবাবপত্র কেনা ও ফ্ল্যাটে ওঠাতে ব্যয় হয়েছে ২৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ টাকা। এরই মধ্যে নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, এ প্রকল্পের সব পদেই অস্বাভাবিক বেতন-ভাতা ধরা হয়েছে। বেতন ছাড়াও আরও কয়েকটি খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় ধরে চূড়ান্ত করা হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ।

এ প্রকল্পের প্রকল্প-পরিচালকের বেতন ধরা হয়েছে চার লাখ ৯৬ হাজার টাকা। পাশাপাশি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন, এজন্য আরও দুই লাখ টাকা পাবেন। সব মিলিয়ে প্রকল্প পরিচালক পাবেন ছয় লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এ ছাড়া গাড়ি চালকের বেতন ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার ৭০৮ টাকা, রাঁধুনি আর মালির বেতন ৬৩ হাজার ৭০৮ টাকা।