বাসে হাত হারানো রাজীব আর নেই

দুই বা‌সের প্রতি‌যো‌গিতায় ডান হাত হারানো রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন (২১) মারা গেছেন।

ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। রাজীবের স্বজন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই ) বাচ্চু মিয়া বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের গেটে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তিতুমীর কলেজের ওই ছাত্র। হাতটি বেরিয়ে ছিল সামান্য বাইরে।

হঠাৎই পেছন থেকে একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে পেরিয়ে যাওয়ার বা ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকে গা ঘেঁষে পড়ে।

দুই বাসের প্রচণ্ড চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দু-তিনজন পথচারী দ্রুত তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন সে হাতটি রাজীবের শরীরে আর জুড়ে দিতে পারেননি।

শম‌রিতা হাসপাতা‌লে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজীব‌কে ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জে স্থানান্তর করা হয়। সাম‌য়িক উন্নতির পর গত সোমবার থে‌কে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাজী‌বের মস্তিষ্ক অসাড় হ‌য়ে যায়। সে থে‌কে আর জ্ঞান ফিরে‌নি তার।

রাজীবের খালা লিপি আকতার সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের রাজীব আর নেই। রাত সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসকরা আমাদের এ খবর জানিয়েছেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে রাজীবের লাশ গ্রামের বাড়ি বাউফল নিয়ে যাওয়া হবে।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন স্নাতকে।

পড়ালেখার ফাঁকে একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে নিজের আর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই ভাইয়ের খরচ চালানোর সংগ্রাম করে আসছিলেন এই তরুণ।