বাস থেকে খালেদার নাম মুছে দিল ছাত্রলীগ

রাজশাহী কলেজের বাস থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নাম মুছে দিয়েছে ছাত্রলীগ। ১৯৯৩ সালে খালেদা জিয়া রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বাসটি উপহার দিয়েছিলেন।

বাসটির গায়ে এত দিন খালেদা জিয়ার নাম ও উপহার দেওয়ার সাল-তারিখ লেখা ছিল। গত শনিবার দুপুরে ছাত্রলীগের নেতারা বাস থেকে তাঁর নামটি মুছে দিয়ে নিজেরাই ছবি তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।

গত শনিবার বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটের সময় রাহুল ভট্টাচার্য নামের এক যুবক খালেদা জিয়ার নাম মোছার একটি ছবিসহ তাঁর ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এটি তিনি ছাত্রলীগের রাজশাহী কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান ও রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষকে ট্যাগ করেছেন। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ তথা রাজশাহী কলেজের কোনো জায়গায় কোনো চোরের নাম থাকবে না, থাকতে পারে না। আজ রাজশাহী কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের বাস থেকে খালেদা চোরের নাম মুছে ফেলেছেন রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয় বড় ভাই নাইমুল হাসান নাঈম ভাই।’

ছবিতে দেখা যায়, নাইমুল হাসান কালো কালি দিয়ে বাসের গায়ে লেখা খালেদা জিয়ার নাম মুছে দিচ্ছেন। তাঁর পাশে কালির পাত্র ধরে দাঁড়িয়ে আছেন ছাত্রলীগের রাজশাহী কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসিক দত্ত। ছাত্রলীগের আরও কয়েকজন কর্মীকে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে নাম মোছার ব্যাপারে সহযোগিতা করতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ গতকাল রোববার বিকেলে বলেন, তিনি ফেসবুক দেখেননি। তবে রাজশাহী কলেজেই আছেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তিনি পরে জানাবেন।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, আগে তিনি বিষয়টি জানতেন না। গতকাল রোববার তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তিনি নাইম হাসানের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। তিনি খালেদা জিয়ার নাম মুছে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাইমুল হাসান গতকাল বিকেলে বলেন, খালেদা জিয়ার উপহার দেওয়া বলে বাসটিতে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেন। তাঁরা বসার পরে জায়গা থাকলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা বসার সুযোগ পান। অনেক সময় তাঁরা মুখ ফুটে বলেও ফেলেন যে এটা তাঁদের নেত্রীর দেওয়া বাস। তিনি বলেন, বাসটি রাজশাহী নগরের বায়া এলাকায় যাতায়াত করে। সেই এলাকা থেকে যেসব ছাত্রছাত্রী আসা যাওয়া করেন তাঁদের সঙ্গে কথা বললেই তাঁর কথার সত্যতা মিলবে।

নাইমুল হাসান দাবি করেন, এটা তাঁদের দলীয় বা ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থে করেননি বা কাউকে ছোট বা খাটো করার জন্যও করেননি। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্য করেছেন। চোর বলে ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, কে কী লিখেছেন, তিনি বলতে পারবেন না। তিনি বলেন, মন্তব্য যাঁরা লিখেছেন তাঁরা সবাই ছাত্রদলের নেতা-কর্মী।