বাহাদুর বাবুর দাম উঠেছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাইয়ে ফরিদপুরে ৩৫ হাজার ৯০৭টি পশু প্রস্তুত করেছে খামারিরা। কোনো প্রকার ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যমুক্তভাবে এসব পশু পালন করা হয়েছে বলে জানান খামারিরা। আর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গরু মোটা-তাজা করণে খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করার কথা।

কোরবানির ঈদের পশু পালন করে সাবলম্বী হচ্ছে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকার খামারিরা। শুধুমাত্র কোরবানিকে সামনে রেখে ফরিদপুরে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট গরু মোটা-তাজা করার খামার। তেমনি শহরতলীর মুন্সীবাজার দেওড়া গ্রামের নিতাই লাল সাহার ছেলে দেবদাস সাহা দেবু দীর্ঘ ৩২ মাস লালন-পালন করেছেন বাহাদুর বাবুকে (নিজের বাড়ির গাভির বাচ্চা)। কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ছাড়া নিজের বাড়ির খড়, ভুষি, লবণ ও ক্ষেতের কাঁচা ঘাস খাইয়ে বড় করেছেন বাহাদুর বাবুকে।

বিশাল আকৃতির বাহাদুর বাবুকে কোরবানির ঈদের জন্য ক্রয় করতে ও দেখতে দেবুর বাড়িতে ভিড় করছে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। বিশ মণ মাংসের বাহাদুর বাবুর দাম তিনি হাকিয়েছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা। ইতোমধ্যেই বাহাদুর বাবুর দাম উঠেছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা। ঈদের বাকি আরও কিছু দিন। সেজন্য আরও কিছু ক্রেতাকে দেখাতে চান বাহাদুর বাবুর মালিক।

দেবদাস সাহা দেবু বলেন, সারা বছরই আমরা খামারের দুধের গাভি পালন করি। তবে কোরবানির মওসুমে কিছু ষাড় কিনে মোটাতাজা করি। নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনের মাধ্যমেই এই খামারের গরু মোটাতাজা করা হয়। কোনো প্রকার ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করা হয় না। কিছুদিন আগে আমার খামার থেকে একটি দুধের গাভি (২৫ লিটার দুধের) বিক্রি করেছি সাড়ে ৩ লাখ টাকা। তিনি এই খামারের মাধ্যমেই সাবলম্বী হয়েছেন।

শুধু দেবুই নয়। শহরতলীর গোলডাঙ্গীর রোজিনা, ধলার মোড়ের শাহানা, শামীমসহ একাধিক ব্যক্তি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরু মোটা-তাজা করেছেন। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা গরু মোটাতাজা করে থাকেন। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। খামারিরা এখন সঠিক মূল্যে পোষা গরু-ছাগল বিক্রয়ে অপেক্ষায় আছেন।

একাধিক খামারি বলেন, আমরা কিছু লাভের আশায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করে থাকি। কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ছাড়া স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেছি। এখন বিক্রির অপেক্ষায় আছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এখন যেন ভারত থেকে কোরবানির গরু আমদানি না করা হয়। ভারতের গরু না আসলে, আমরা কিছুটা লাভবান হবো।

ফরিদপুর প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ২২ হাজার ৭৬৭টি গরু ও ১৩ হাজার ৭৯৭টি ছাগল-ভেড়া বিক্রির জন্য প্রস্তুত আছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুল হক বলেন, খামারিদের আমরা কীভাবে গরু মোটা তাজা করা যায় সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। এছাড়াও খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকি প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে। ইতোমধ্যে ফরিদপুরের অনেক খামারি গরু মোটাতাজা করে সাবলম্বী হয়েছেন।