বিএনপির তিন সিটির মনোনয়ন বিতরণ ২০ জুন

আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটির দফতরের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রিজভী বলেন, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ২০ জুন, বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দশ হাজার টাকা জমা দিয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করা যাবে। ২১ জুন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পঁচিশ হাজার টাকা জামানতসহ পূরণকৃত মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ২১ জুন, বৃহস্পতিবার সারাদেশের জেলা ও মহানগরীতে বিক্ষোভ-সমাবেশের ঘোষণা দেন রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে চলছে এক আজব শাসন। এখানে বিরোধী দল, বিরোধী মত ও বিরোধী বিশ্বাসের মানুষরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অবৈধ ক্ষমতার শক্তিতে এখন দেশে দণ্ডমুণ্ডের কর্তা সেজে বসেছে। দেশের সর্বজনপ্রিয় নন্দিত-নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শুধু অন্যায়ভাবে সাজাই দেয়া হয়নি, এখন তার ওপর চলছে নানা কায়দায় অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন। তার শারীরিক অসুস্থতার যাতে যথাযথ চিকিৎসা না হয় তার জন্য সরকার এমন কোন ফন্দি নাই যা আঁটছে না। চিকিৎসাকে বিলম্বিত করার জন্য মন্ত্রীদের দিয়ে নানা কাহিনী শোনানো হচ্ছে মানুষকে।’

‘এখন শুধু কারা কর্তৃপক্ষই নয় এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী, সেতু ও যোগাযোগমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারা এমন কথা বলছেন, যেন বেগম খালেদা জিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হলে তাতে মনে হয় মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।’

রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান এজন্য যে, ইতিপূর্বে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, উন্নতমানের পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি-যেগুলো সুযোগ ইউনাইটেড হাসপাতালে রয়েছে বলেই তিনি সেখানে চিকিৎসা করাতে চান। রোগী সাধারণত আস্থাভাজন চিকিৎসকের কাছেই যেতে চান। আস্থা তৈরি হয় চিকিৎসক কর্তৃক রোগীর আরোগ্য হওয়া, এরপর সেই চিকিৎসকের কাছে বারবার ফলোআপ ইত্যাদির কারণে। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকেই রোগী তার আস্থাভাজন চিকিৎসক ও হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল হন।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘১৮৯৪ সালে কারাবিধি যখন তৈরি হয় তখন ইউনাইটেড বা স্কয়ার হাসপাতাল ছিল না। কিন্তু এখন বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মান উন্নতমানের বলেই মানুষ সেখানে ভিড় করে। সরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকলেও সেবার মান এত নিম্নমানের যে মানুষ জমি-জায়গা বিক্রি করে হলেও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে।’

রিজভী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি (বেগম জিয়া) রাজি হলে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তাকে নেয়া যেতে পারে। অর্থাৎ সরকার তাকে হাতের মুঠোর মধ্যে রাখার নিশ্চিত করতে চায় বলেই এর বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে চায় না। সেজন্যই আমরা বলেছি, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে আরও গুরুতর, আরও বিপ্জ্জনক অবস্থার দিকে ঠেলে দেয়ার জন্যই সরকার গড়িমসি করছে।’

‘আমি সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। ইউনাইটেড হাসপাতালে তার যথাযথ চিকিৎসা দিতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ক্ষমতা থেকে সরে গিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নইলে লেট ক্লিয়ারিংয়ের জন্য অনেক বেশি ডেমারেজ দিতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।