বিএনপির ভোটারদের গাজীপুরছাড়া করা হচ্ছে : রিজভী

২৬ জুনের ভোটকে সামনে রেখে বিএনপি সমর্থকদের গাজীপুর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী। নির্বাচন কমিশন চোখ বন্ধ করে আছে বলেও দাবি তার।

ভোটের চার দিন আগে শুক্রবার নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘নিশ্চিত ভরাডুবির ভয়ে গাজীপুরে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি ও বিরোধী দলের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।’

‘গত কয়েক দিনে বেশ কিছু নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের পর এখন নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-কর্মীরা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।’

গত ১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘‘গাজীপুরেও তারা খুলনা মার্কা নির্বাচনের জন্যই পুলিশকে দিয়ে ধানের শীষের সমর্থক ভোটারদেরকে এলকা ছাড়া করে সিটি করপোরেশন এলাকাকে শ্মশানভুমিতে পরিণত করা হচ্ছে-যাতে ভোটারবিহীন নির্বাচন সুচারুভাবে সম্পন্ন করা যায়।’

‘আওয়ামী লীগের বিজয় নিশান নিশ্চিত হয় ভোট ডাকাতি ভোট সন্ত্রাস, জালভোট, ভোটকেন্দ্র দখল ও অবৈধ অস্ত্রের আস্ফালনের মাধ্যমে। আর এগুলোর দিকে চোখ বন্ধ থাকা দায়িত্বহীন নির্বাচন কমিশন হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছে।’

‘খালেদা জিয়ার স্ট্রোকের আশঙ্কা’

আরেকটি ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন করতে নীলনকশার অংশ হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে রাখার অভিযোগও করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

‘দিনের পর দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মস্তিষ্কে রক্তরণ বা পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে বলছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী।’

‘সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ কারাবিধির দোহাই দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি যাতে প্রকৃত চিকিৎসা না পেয়ে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েন সেজন্যই এত বাধা ও আপত্তি সরকারের।’

‘সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে’

দেশজুড়ে বিরোধী দল নিধনের কর্মসূচি থামছে না আর গণমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ চলছে বলেও মনে করেন রিজভী। বলেন, ‘সরকারের পরিকল্পনা ও নীলনকশা যেন অব্যাহত আছে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে দুমড়ে মুচড়ে ফেলার জন্য।’

‘তবে বন্ধুরা, সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। জনগণ স্বৈরাচার সরকারকে লাল কার্ড দেখাতে উদ্দীপ্ত বদ্ধ পরিকর। সরকারের মদগর্বী আস্ফালন উপেক্ষা করেই জনগণ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে।’

রিজভী বলেন, ‘ভোটারবিহীন সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই দেশজুড়ে বিচারবর্হিভূত হত্যা, গুম, খুন ও গণগ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রয়েছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছে গণমাধ্যমসহ মানুষের বাক-স্বাধীনতা।’

মানবাধিকার পরিস্থিতি তদন্তে জাতিসঙ্ঘের অনুরোধে বাংলাদেশ সাড়া দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন রিজভী। তার দাবি, জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার জিয়াদ রাদ আল হুসেইন এই কথা জানিয়েছেন।

‘জিয়াদ রাদ আল হুসেইন নাগরিক সমাজের কাজ করার ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হওয়ার উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানান।’

‘তিনি বলেন, বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। দেশটিজুড়ে বিচারবর্হিভূত হত্যা চলছেই। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে অবিলম্বে বিচারবর্হিভুত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।’