বিএনপির সমাবেশ : রাজধানীতে হরতালের আমেজ

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে লোকাল বাসের সংকট দেখা দিয়েছে। বিএনপির সমাবেশ কর্মসূচি ঘিরে নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস বন্ধ রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গাড়ির অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় সড়কে দাঁড়িয়ে থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন কর্মজীবী হাজারও মানুষ। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবীসহ সাধারণ নগরবাসী।

রোববার সকালে অফিসসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে রাস্তায় নেমেই বেকায়দায় পড়েন নগরবাসী। প্রতিদিন যাতায়াতকারী বাসগুলোর দেখা নেই। সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন শত শত মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এতে নারী, বৃদ্ধ ও শিশুদের ভোগান্তি ছিল অবর্ণনীয়।

বাস না পেয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যে রওনা দেন। কখনও কখনও দু’একটি বাসের দেখা মিললে তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সবাই। বাসে উঠতে কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন। হুড়োহুড়িতে আহতও হচ্ছেন। অন্যদিকে মওকা বুঝে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পকেটমারেরা। ভিড়ের মধ্যে কারো কারো পকেট কেটে টাকা পয়সা খোয়ানোর ঘটনায় ঘটেছে।

ঢাকায় প্রবেশ পথ হিসেবে পরিচিত এলাকাগুলোতে বাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষ। রায়েরবাগ থেকে গুলিস্তান চলাচলকারী শ্রাবণ পরিবহনের কোনো বাস নেই। অন্যদিন এই রুটে প্রতিদিন শ্রাবণ পরিবহনের কয়েক শ’ বাস চলাচল করে। এ ছাড়া এ রুটে চালাচলকারী মেঘলা পরিবহন, ৩৬/বি, হিমালয় পরিবহন, মনজিল পরিবহনের গাড়িগুলোও চলাচল করতে দেখা যায়নি।

বাসস্ট্যান্ডে গুলিস্তানের একটি মার্কেটের বিক্রয়কর্মী ফয়জুর রহমান বলেন, ‘বাস বন্ধ আগে জানলেও তো অন্য ব্যবস্থা করতাম। এখন কীভাবে যাব। শুনছি বিএনপির মিটিংয়ের জন্য বাস বন্ধ। এখন মনে হয় হেঁটেই যেতে হবে।’

এ ছাড়া পাশের শনির আখড়া, কাজলা বাসস্ট্যান্ড, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, সায়েদাবাদ এলাকায় বিপুল মানুষকে গাড়ির অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকটে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিচ্ছেন। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপরে গুলিস্তানমুখী মানুষের সারি। কাউকে কাউকে ট্রাক, পিকআপ ভ্যানেও যেতে দেখা গেছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ থেকে যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ মানুষকে দূরপাল্লার গাড়ি থামিয়ে লোক পরিবহনে বাধ্য করতেও দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী চলাচলকারী ‘২২/বি (আগের ৮ নম্বর বাস)’, সায়েদাবাদ থেকে গাজীপুর চলাচলকারী বলাকা পরিবহন; মিরপুর থেকে যাত্রীবাড়ী চলাচলকারী শিকড়, শেখর পরিবহনের গাড়িরও সংকট রয়েছে।

সদরঘাট থেকে উত্তরা হয়ে গাজীপুর চলাচলকারী সুপ্রভাত, ভিক্টর, প্রভাতী বনশ্রীসহ অন্যান্য পরিবহনেরও খুব অল্প সংখ্যক গাড়ি চালাচল করছে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গুলিস্তান অংশে অন্যান্য সময় গাড়ি জটলা লেগে থাকলেও আজ (রোববার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোনো লোকাল বাস দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘রাজধানীতে বাস বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের নেই। আমি তো রাস্তায় পর্যাপ্ত বাস দেখতে পাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আজ (রোববার) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার লিখিত অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। ২৩ শর্তের বিএনপির এ সমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বলে আশা করছে সংসদের বাইরে থাকা এ রাজনৈতিক দলটি।