‘বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করলেও আমি হবো না’

দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েও এমপি হিসেবে শপথ নিয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান বলেছেন, সংসদে দিয়ে তিনি দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কথা বলবেন। তিনি আর বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করলেও আমি বহিষ্কার হব না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর সাংবাদিকের কাজে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন তিনি।

এর আগে বেলা দুইটার সময় অত্যন্ত গোপনে স্পিকারের কর্যালয়ে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়। কেউ শপথ নিয়ে তার দিনক্ষণ জানায় সংসদ সচিবালয়। জাহিদুর রহমানের বেলায় সেটাও মানা হয়নি।

জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী তিনি যেন শপথ নিয়েছেন দাবি করে বিএনপির এই নেতা জানান, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নিয়েছি। দল আমাকে বহিষ্কার করতে পারে জেনেও আমি শপথ নিয়েছি। দল বহিষ্কার করলেও আমি দলে আছি।’

জাহিদ বলেন, এর আগেও আমি তিনবার নির্বাচন করেছি। চতুর্থবারে এসে নির্বাচিত হতে পেরেছি। ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে এর আগে কখনও বিএনপির ছিল না। স্বাধীনতার পর থেকে এটি আওয়ামী লীগের। এই প্রথম বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বিজয়ী হতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি শপথ নেয়ার জন্য দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছি, কথা বলেছি কিন্তু সম্মতি পাইনি। তারা কোনো প্রকারেই কোনো সম্মতি দেয়নি। দলের এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত কেউ শপথ নিবে না।

শপথ নেয়ার পর দল তো আপনাকে বহিষ্কার করতে পারে- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা নিতে পারে। বহিষ্কার করতে পারে। সেটা তো জেনে শুনেই শপথ নিয়েছি। দল যদি মনে করে বহিষ্কার করে করতে পারে। কিন্তু আমি দলেই আছি। বহিষ্কার করলেও আমি এই দলের একজন নিবেদিত প্রাণ। ছাত্র জীবন থেকে দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে আমি এই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করলেও আমি তো বিএনপি থেকে বহিষ্কার হব না।

তিনি বলেন, আমার নেত্রীর মুক্তির জন্য সংসদে যে ভূমিকা রাখা দরকার। সেটা আমি করব। বিশেষ করে আমার এলাকার হাজার হাজার নিরবরাধ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমি সংসদে দাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানাবো যে আপনি এসব দেখেন। কারণ এসবের বাদি সব পুলিশ। পুলিশ যা করেছে সব মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আপনার লোক কোনো মামলা করেনি। কাজেই আপনার এসব দেখা উচিত। গণতন্ত্রের স্বার্থে সেসব মামলা প্রত্যাহারের আমি দাবি রাখব। আমার নেত্রী একজন বয়স্ক মহিলা। তার ৭৩ বছর বয়স। উনাকে যেন গণতন্ত্রের স্বার্থে মুক্ত করে দেয় সংসদে এই আহ্বান আমি জানাবো। এটাই আমার প্রথম অঙ্গীকার।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।