‘বিএনপি নেতাদের স্পষ্ট ঘোষণা, খালেদাকে ছাড়া নির্বাচন নয়’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনও নির্বাচন হবে না বলে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন দলটির নেতারা। শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে দলটির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এ ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনও নির্বাচন হবে না।

অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদীন বলেন, আর মাত্র দুটি মামলায় জামিন হলেই আমাদের নেত্রী জেল থেকে মুক্তি পাবেন। দলের আইনজীবীরা গ্রেফতারকৃত নেতাদের আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে মুক্ত করবেন বলে তিনি জানান।

শনিবার দুপুর ২ টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিষ্ঠাবাষির্কীর সমাবেশ হচ্ছে।

ভাইস চেয়ারম্যান শাসুজ্জামান দুদু বলেন, সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকা দেশ থেকে নাই হয়ে গেছে। এসব টাকা ফেরত দিতে হবে। বেগম জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবো না।

সমাবেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনে এত ভয় কেন তা জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনও নির্বাচন হবে না। তাকে বাইরে রেখে কোনও নির্বাচন গ্রহণযোগ্যও হবে না।’

সাবেক এই স্পিকার বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে সফল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। বাংলার ইতিহাস থেকে জিয়ার ইতিহাস মুছে ফেলা যাবে না।’

তারেক রহমান প্রসঙ্গে জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘তিনি দেশে ফিরে এলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত মানুষ জেগে উঠবে।’

সমাবেশের বক্তব্যে দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপিকে সমাবেশ করতে সরকার বিভিন্নভাবে বাধা দিয়েছে। কাল (৩১ আগস্ট) সারারাত নেতাকর্মীদের বাসায়-বাসায় পুলিশ হানা দিয়েছে। এরপরও জনস্রোত ঠেকাতে পারেনি সরকার।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আপনি যদি খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিয়ে পুলকিত হন, তাহলে ধরে নেন, স্বল্প দিনের মধ্যে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জেলেই আপনার দেখা হতে পারে। ফলে, তা না করে তাকে মুক্তি দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন, জনগণ যাকে চাইবে, তিনিই সরকার পরিচালনা করবেন।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলেই যে বিএনপি নির্বাচনে যাবে-কে বললো? সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচনকালীন সরকার নির্দলীয় হতে হবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে কোনও নির্বাচন হবে না। আগামী দিনে তাকে মুক্ত করেই নির্বাচনে যাবে বিএনপি।’

শনিবার দুপুর ২টায় শুরু হয় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ। এর আগে সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানান। আগামীকাল রবিবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে এবং সভাপতিত্ব করছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।