বিএসএফ জওয়ানের মাথা কাটল পাক বাহিনী

ইমরান খান সরকারের ক্ষমতায় আসার পরও সীমান্তে পাক বাহিনীর মনোভাব যে আদৌ বদলায়নি তা আবারও প্রমাণ হলো। জম্মুর আন্তর্জাতিক সীমান্তে এক বিএসএফ জওয়ানকে গুলি করে তার মাথা কেটে নিয়েছে পাক বাহিনী।

নিয়ন্ত্রণরেখায় আগে ভারতীয় সেনাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সীমান্তে এমন ঘটনার নজির নেই। ফলে সীমান্তে পাক হামলা আরও তীব্র হচ্ছে বলেই মনে করছেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

বুধবার জম্মুর রামগড় সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে সরকন্দা ঘাস কাটতে গিয়েছিল বিএসএফের একটি দল। বিএসএফ সূত্র বলছে, ওই এলাকায় ভারতের দিকে জলাভূমি রয়েছে। পুরো এলাকায় বড় বড় সরকন্দা ঘাসে ঢাকা। যাতায়াতের সুবিধার জন্য ওই এলাকায় মাঝে মাঝে ঘাস কাটার প্রয়োজন হয়।

গতকাল সকাল সাড়ে দশটার দিকে ওই বিএসএফের দলটির উপরে হামলা চালায় পাক রেঞ্জার্স। বিএসএফ জানিয়েছে, ভারতীয় জওয়ানরাও পাল্টা জবাব দিয়েছে। কিন্তু পাক স্নাইপারের গুলিতে নিহত হয়েছেন হেড কনস্টেবল নরেন্দ্র কুমার।

ওই ঘটনার পরেই নরেন্দ্রর দেহ উদ্ধারের জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ওই এলাকা জলাভূমি। ফলে সীমান্তের কাছে গিয়ে জওয়ানের দেহ উদ্ধারের ক্ষেত্রে ভারতীয় ও পাকিস্তানি বাহিনী একসঙ্গে কাজ করলে সুবিধা হবে বলে বুঝতে পেরেছিলেন বিএসএফ কর্মকর্তারা। কিন্তু পাক বাহিনী সীমান্তের ওপার থেকে কিছুটা এগিয়ে আসার পরে জানায়, তাদের পক্ষে আর সামনে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ওই এলাকায় পানি জমে রয়েছে।

পাকিস্তানের এই মনোভাবের ফলে সূর্যাস্তের আগে নরেন্দ্রর দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করতে পারেনি বিএসএফ। কারণ, ভারতীয় জওয়ানদের যে ফের নিশানা করা হবে না তার নিশ্চয়তা ছিল না। সূর্যাস্তের পরে জলাভূমিতে নেমে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে নরেন্দ্রর দেহ উদ্ধার করেন জওয়ানরা। দেখা যায়, তার দেহে তিনটি বুলেটের ক্ষত রয়েছে। সেই সঙ্গে তার মাথা কেটে নিয়েছে পাক বাহিনী। হরিয়ানার সোনীপতে কালা গ্রামের বাসিন্দা নরেন্দ্র ১৯৯০ সালে বিএসএফে যোগ দেন। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছেন।

বিএসএফ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন্স স্তরে এ নিয়ে পাকিস্তানের কাছে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা ও বিএসএফকে সতর্ক করা হয়েছে। সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর মে মাসে নিয়ন্ত্রণরেখায় এভাবেই হামলা চালিয়ে দুই ভারতীয় সেনাকে খুন করেছিল পাক সেনা বাহিনী। এই হামলাও ওই বাহিনীই চালিয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।