বিছানার চাদরেই বিপদ!

নিজের বিছানাটিকে সকলের কাছেই এক টুকরো স্বর্গ মনে হয়। জাজিম, তোশক, ম্যাট্রেস, বালিস, বিছানার চাদর, বালিশের কাভার ইত্যাদি সব মিলিয়েই বিছানা। আপনার বিছানার উপর নির্ভর করে আপনার কি কি রোগ বা অস্বস্তিমূলক আবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

আমাদের দেশে এই বিছানার ব্যাপারে একেবারেই সচেতন নই আমরা। অনেকের এই ব্যাপারে ধারণাও নেই যে এই বিছানার ব্যাপারে কত রকমের ভুল ধারণা আমাদের আছে, এবং সেগুলোর কারণে দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছি আমরা। যেমন, জাজিম-তোশক ইত্যাদি নিয়মিত ভিত্তিতে ড্রাই ওয়াশ করতে হয়। আসুন, জেনে নিই কিছু ভ্রান্ত ধারণা এবং এর পরিবর্তে করণীয় কাজ-

১. প্রতিদিন বিছানার চাদর খুব কম মানুষই বদল করে থাকেন। জেনে রাখুন, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য এটা মোটেও ভালো নয়।

২. বিচানার চাদর বদলে ফেললেই বিছানা পরিষ্কার হয়ে যায় না। জাজিম, তোশক, ম্যাট্রেস ইত্যাদিতে লুকিয়ে থাকে অসংখ্য জীবাণু ও ডাস্ট মাইট যা আপনাকে অসুস্থ করার জন্য যথেষ্ট। আমাদের দেশে জাজিম-তোশক বা ম্যাট্রেস একবার কেনার পর টানা অনেক বছর ব্যবহার করি আমরা, এগুলোর জীবাণু ধ্বংস করার জন্য যে ড্রাই ক্লিন করতে হয়, সেটা বেশিরভাগ মানুষই জানি না।

৩. বেশি উঁচু বালিশে শোয়া বা বেশী শক্ত বালিশে ঘুমানো মোটেও আপনার জন্য ভালো নয়। বালিশ হবে ফ্ল্যাপি ও মাঝারি উচ্চতার।

৪. বালিশের কাভার হিসাবে খসখসে কাপড় ব্যবহার না করা সর্বোত্তম। এতে আপনার চেহারার ক্ষতি হয় মারাত্মক ভাবে। শার্টিণ , সিল্ক ইত্যাদি কাপড়ের বালিশের কাভার ব্যবহার করুন।

৫. আমাদের মাঝে একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে যে বিছানা খুব শক্ত হওয়া ভালো, নরম বিছানায় শুলে নানান রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তবে আসলেই, বিছানা খব শক্ত হওয়াও ভালো নয়, সেটাও আপনার দেহে নানা সমস্যা তৈরি করে। বিছানা ফোমের না হয়াই ভালো। তবে নরম জাজিম তোশক বা ভালো ম্যাট্রেসের বিছানা হতে কোন অসুবিধা নেই।

৬. হরেক রকম ডিজাইনের সিনথেটিক চাদর বা বেড কাভারের শৌখিন আমরা অনেকেই। জেনে রাখুন, ঘুমানোর জন্য সেরা হচ্ছে পাতলা নরম সুতির বিছানার চাদর।

৭. আমরা সাধারণত সেই একই ভাবে বিছানা কিনে থাকি, যা অন্যরা কেনে।একেকজন একেক রকম জাজিম, তোশক বা ম্যাট্রেসে আরাম অনুভব করতে পারেন। যার জন্য যেটা আরামদায়ক মনে হয়, তার উচিত সেটাই পরখ করে দেখে নিয়ে তারপর কেনা। যেমন অনেকের জন্য পাতলা জাজিম আর মোটা তোশক আরামদায়ক মনে হতে পারে। অনেকের কাছে ম্যাট্রেসের ওপরে পাতলা তোশক বিছিয়ে ঘুমানো শান্তির মনে হতে পারে। নির্ভর করে যার যার চাহিদার ওপরে।

৮. যখন তখন বিছানায় উঠে পড়া মোটেও ভালো অভ্যাস নয়। বিশেষ করে বাড়িতে বাচ্চা থাকলে। বাইরে থেকে ফিরে গোসল সেরে নিয়ে বা পোশাক বদলে হাত-পা ধুয়ে তবেই বিছানায় উঠুন।

৯. অনেকেই একই বালিশ বছরের পর বছর ব্যবহার করেন, একই বালিশের কাভার দিনের পর দিন ব্যবহার করেন। জেনে রাখুন, আপনার মুখে ব্রণ ও মাথায় খুশকি হবার অন্যতম বড় কারণ বালিশ। নিয়মিত বালিশ পরিষ্কার করা জরুরি এবং বালিশের কাভার রোজ বদলে ফেলা জরুরি। ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, সর্দি কাশি ইত্যাদি সব রোগের অন্যতম কারণ নোংরা বিছানা।

১০. লেপ বা কম্বল অবশ্যই কাভার লাগিয়ে ব্যবহার করা উচিত আর নিয়মিত সেটা বদলেও ফেলা উচিত। বিছানার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে আপনার জীবনে ও স্বাস্থ্য। তাই এই ব্যাপারে একটু সচেতনতা খুবই জরুরী।

১১. এমনভাবে বেডরুমের স্থান ও অবস্থান নির্বাচন করুন যেনো আলো বাতাস প্রবেশের জায়গা পায়।