বিশাল বিস্ফোরণ বিকট শব্দ, রেহায় পায়নি কেউ!

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনগুলোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে কোন সাধারণ ঘটনা বলা যায় না। তাৎক্ষণিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, রাস্তার ভ্যান থেকে শুরু করে ছোট যানবাহন সরিয়েও মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, এ কোন সাধারণ অগ্নিকাণ্ড নয়, বিশাল বিস্ফোরণ হয়েছে।

ভেতরে বিভিন্ন কেমিকেলের সরঞ্জাম থেকে শুরু করে সিলিন্ডার গ্যাস ও নানা রকম বিস্ফোরকের দ্রব্য থাকাতে আগুন ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। যার কারণে আশেপাশে থাকা সাধারণ মানুষও সরে যাওয়ার হয়ত সময় করে উঠতে পারেনি। যার কারণে সড়কেও মিলছে মরদেহ।

এছাড়া আগুন লাগার পর থেকেই বিস্ফোরণের মত একটু পর পর শব্দ করে ভেতরে বিকট শব্দে সরঞ্জামগুলো বিস্ফোরণ হচ্ছিল।

চুড়িহাট্টায় ফায়ার সার্ভিসের অস্থায়ী তথ্য কেন্দ্র থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখান থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার অভিযানে ৬৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও সার্চিং অভিযান চলছে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ের প্রতিটি কক্ষ তল্লাশি শেষে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে পুরো তথ্য দেয়া সম্ভব হবে।

বুধবার রাত তখন দশটা, অন্যান্য দিনের মতই রাজধানীর চকবাজারের চুরিহাট্টা মসজিদের গলিতে লেগে আছে যানজট। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, হঠাৎ করেই বিকট শব্দে কেঁপে উঠে আশপাশের এলাকা। মসজিদের পাশের ওয়াহেদ ভবন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি বাসা বাড়িসহ নন্দকুমার দত্ত সড়কে থাকা কয়েকটি খাবার হোটেলে।

একই সাথে যানজটে আটকে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। চারতলা আবাসিক ওই ভবনটির নিচতলায় রাসায়নিক গুদাম থাকায় আগুনের ভয়াবহতা দ্রুত বাড়তে থাকে। একের পর এক বিকট শব্দে কেঁপে উঠে পুরো এলাকা।

আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৩৭টি ইউনিট। আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পাশাপাশি শুরু করে আটকা পড়াদের উদ্ধার কাজ। সরিয়ে নেয়া হয় আশপাশের ভবনের বাসিন্দাদের। কিন্তু এলাকার সড়ক সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয় উদ্ধার তৎপরতায়।

এর আগে ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলিতে প্লাষ্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন মারা যায়। এরপর থেকেই ওই এলাকা থেকে কেমিকেল গুদাম উচ্ছেদের জোর দাবি উঠলেও আজও তা কার্যকর হয়নি।