বিশ্বকাপের ইতিহাস গড়া হলো না ক্রোয়েশিয়ার

ক্রোয়েশিয়া যে প্রান্ত থেকে খেলা শুরু করেছিল সেই গোলপোস্টের পেছনের গ্যালারিতেই তাদের সমর্থকদের বড় দলটি ছিল। অন্য পোস্টের পেছনে ফ্রান্সের। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়াট দর্শকদেরই দিতে হবে ফুল মার্ক। পুরো মাচেই তারা মাতিয়ে রেখেছে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়াম।

তবে শেষটা ভালো হলো না তাদের। সেই ভর দুপুর থেকে লুঝনিকি স্টেডিয়ামে এসে আনন্দ-উৎসব করে সময় কাটিয়েছে। আর শেষটা ভগ্ন হৃদয়েই শেষ করতে হলো। প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়ার যে প্রত্যাশা ছিল তা ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে ফ্রান্স।

ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়ার ফাইনালে দিদিয়ের দেশমের লই ছিল ফেভারিট। সেটা কাগজ-কলমের। তবে এই বিশ্বকাপে সাধারণ দর্শকরে সমর্থন ছিল ক্রোয়েশিয়ার দিকে। গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছিল ২৭ বছর আগে স্বাধীন হওয়া দেশটি।

সবার ধারণা ছিল রাশিয়া বিশ্বকাপ একটি নতুন চ্যাম্পিয়ন উপহার দেবে। যেমন ২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ দিয়েছিল স্পেনকে। না মস্কোর লুঝনিকি যে লিখে রেখেছিল ফ্রান্সের নাম। রোববার ৯০ মিনিটের ফাইনাল শেষে লুঝনিকি স্টেডিয়াম জানিয়ে দিলো- ক্রোয়েশিয়ার প্রথম নয়, ফ্রান্সেরই হলো দ্বিতীয়বার।

বিশ্বকাপ জিততে ভাগ্য লাগে। সে ভাগ্য মস্কো দেয়নি ক্রোয়েশিয়াকে। আত্মঘাতী গোলে ক্রোয়েশিয়া পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফিরলেও আবার পেনাল্টি গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় ফ্রান্স। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া ক্রোয়েশিয়া অতি আক্রমনে গিয়ে খেসারত দেয় ৩-১ গোলে পিছিয়ে গিয়ে। ৫৯ ও ৬৫ মিনিটে পল পগবা ও এমবাপের গোল দুটিই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।

ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিসের ভুলে ক্রোয়েশিয়া ৬৯ মনিটে ব্যবধান ৪-২ করলেও পরে আর গোল করতে পারেনি। ৪-২ গোলে হেরে বিশ্বজয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় ১৯৯১ সালে যুগোস্লোভিয়া থেকে স্বাধীন হওয়া ছোট্ট দেশটি।

ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাস গড়া না হলেও ইতিহাস ঠিকই গড়েছেন ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম। ১৯৯৮ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এই দেশমের হাত ধরে। তখন তিনি ছিলেন লের অধিনায়ক। ২০ বছর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ট্রফি এলো ফ্রান্সের। এবার সেই শেম দলের কোচ।

ম্যাচের পর ফ্রান্সের ফুটবলাররা এক দৌড়ে ছুটে যায় তাদের সমর্থক বসা গ্যালারির সামনে। সমর্থকরা পারলে গ্রিজম্যান, এমবাপেদের বুকে টেনে নেয়। পারেনি তারা খেলোয়াড়দের ছুঁতে। তবে সমর্থকদের পতাকাগুলো চলে যায় এক এক করে গ্রিজম্যানদের হাতে। ওই পতাকা নিয়েই মাঠের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়ে উল্লাস করেন ফরাসি ফুটবলাররা।