এই বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় সাকিব : দ্য টেলিগ্রাফ

বিশ্বকাপে খেলছেন ১৫০ জন খেলোয়াড়। তাদের মধ্যে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। সবার পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে এ দাবি করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ফর্মে তুঙ্গে আছেন সাকিব। ধারাবাহিকভাবে ব্যাট-বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। চার ম্যাচে দুটি করে সেঞ্চুরি-হাফসেঞ্চুরিতে করেছেন ৩৮৪ রান। বল হাতেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। অদ্যাবধি ৫.৮৪ ইকোনমিতে শিকার করেছেন ৫ উইকেট। বাংলাদেশের দুই ম্যাচে হয়েছেন ম্যাচসেরা।

১৮৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় টেলিগ্রাফ। বিশ্বকাপে খেলা সবার পারফরম্যান্স বিচার করেছেন ঐতিহ্যবাহী সংবাদমাধ্যমটির সাংবাদিক টিম উইগমোর। তার বিশ্লেষণে এখন পর্যন্ত সাকিবই সেরা খেলোয়াড়।

তার দাবি, আপাতদৃষ্টিতে শুধু একজন তার দেশের সেরা ব্যাটসম্যান ও বোলার। ওর নাম সাকিব আল হাসান। নিঃসন্দেহে ২০১৯ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিনিই সেরা খেলোয়াড়।

টেলিগ্রাফের ভাষ্যমতে, সাকিবকে প্রাপ্য মূল্য না দেয়ার একটা প্রবণতা আছে। এটা অদ্ভুত ও রহস্যময়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, আইপিএলসহ বিভিন্ন লিগে তার খেলা উপভোগ করেন ভক্ত-সমর্থকেরা। ২০১৫ সালে তিন ফরম্যাটে আইসিসি র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষে ছিলেন তিনি।

সাকিব ক্রিকেটে কোনো ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই তার বহুবিধ প্রতিভাকে অনেকে সহজে উপেক্ষা করেন। অন্যতম উদাহরণ, ২০১১ সালের পর টাইগারদের সঙ্গে কেবল একটি ওয়ানডে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া।

সংবাদমাধ্যমটি উল্লেখ করেছে, ২০০০ সালে দুটি ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বর্তমান জায়গায় নিয়ে এসেছে। ওই বছর টেস্ট মর্যাদা পায় দলটি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ভর্তি হন সাকিব। ৬ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আঙিনায় অভিষেক হয় তার। স্বভাবজাত ব্যাটিং ও বাঁহাতি বিচক্ষণ স্পিনে শিগগির দলের অপরিহার্য সদস্যে পরিণত হন তিনি।

টেলিগ্রাফ যোগ করেছে, সাকিব সবসময় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলেন। ধারাবাহিকভাবে জ্বলে ওঠেন। তবুও ২০১৪ সালে কোচের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ছয় মাস নিষিদ্ধ হন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই (বিসিবি) তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে সাকিব এখন পরিণত। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবেও সফল বাংলাদেশের নয়নমণি।

নিজেদের পর্যবেক্ষণ থেকে গণমাধ্যমটি বলছে, দলের সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি সামাল দেন সাকিব। পাওয়ার প্লেতে নিয়মিত বল করেন। শেষদিকেও তার বোলিংয়ের নজির আছে। ওয়ানডেতে এখন তিন নম্বরে ব্যাটিং করছেন। আগে করতেন মিডলঅর্ডারে। দুই জায়গাতেই সফল। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি।

টেলিগ্রাফ সবশেষে উল্লেখ করেছে, সাকিবের উদযাপন সাদামাটা। উইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করেও তার উদযাপন ছিল খুবই সরল-সহজ। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের ঐতিহাসিক জয় এনে দেয়ার পর নন-স্ট্রাইকে থাকা লিটন দাসের সঙ্গে কেবল হাত মেলান। প্রত্যেক দলের বিপক্ষে নিজের সেরাটা দেয়াই যে তার ধ্যানজ্ঞান।