বিশ্বকাপ ফুটবল : বহু স্বপ্নের সামনে ক্রোয়েশিয়া

রাশিয়ায় বিশ্বকাপের শেষ দিনে আজ শিরোপার জন্য মাঠে নামবে ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্স।

জিতলে ক্রোয়েশিয়ার জন্য এটিই হবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে কোনো বড় ধরনের ট্রফি জয়।

আর ফ্রান্সের জন্য এটি অবশ্য নতুন কোনো ঘটনা নয়। গত ছয়টি বিশ্বকাপের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠলো তারা।

জিতলে বিশ বছর পর এটি হবে ফ্রান্সের দ্বিতীয় শিরোপা।

এর আগে ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জিতেছিলো ফ্রান্স।

আর কোচ দিদিয়ের দেশঁমের জন্য এটি তৃতীয় বিশ্বকাপ এবং তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে ট্রফি জেতার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো দালিচ দলটির দায়িত্ব নিয়েছেন মাত্র নয় মাস কিন্তু দল জিতলে তার জন্য এটা হবে জীবনের সেরা অর্জন।

ক্রোয়েশিয়া: স্বপ্ন, স্বপ্ন ও স্বপ্ন

দেশটির জনসংখ্যা মাত্র চল্লিশ লাখের কিছু বেশি। যদিও এর চেয়ে কম জনসংখ্যা নিয়ে ১৯৩০ সালে শিরোপা জিতেছিলো উরুগুয়ে।

ফিফা র‍্যাংকিংয়ে বিশতম এই ক্রোয়েশিয়া শিরোপা জিতলে এটিই হবে সবচেয়ে কম র‍্যাংকিং নিয়ে বিশ্বকাপ জেতা।

বিশ বছর আগে সেমিফাইনালে ফ্রান্সের সাথে হেরেই স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিলো ক্রোয়েশিয়ার।

আর এবার যখন সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিলো দালিচের দল তখন রীতিমত বন্য উৎসবে মেতে উঠেছিলো গোটা ক্রোয়েশিয়া।

“ড্রিম, ড্রিম, ড্রিম! ক্রোয়েশিয়া ফাইনালে” -এটাই শিরোনাম করেছিলো স্পোর্টসকি নভসটি পত্রিকা।

আর দালিচ বলেছিলো “এলিটদের তালিকায় পৌঁছানো হলো”।

এখন আর মাত্র একটি ধাপ…তারপরেই ইতিহাস।

খেলা শেষে আসলে জানা যাবে এ স্বপ্ন পূরণের আনন্দে ভাসছে কি-না লাল, সাদা আর নীল পতাকা।

ফ্রান্সের জন্য ক্ষত প্রশমনের সুযোগ ?

২০১৬ সালে ইউরোতে নিজ দেশেই ফাইনালে উঠেছিলো ফ্রান্স কিন্তু হারতে হয়েছিলো পর্তুগালের কাছে।

এখনো সেই পরাজয়ের ধাক্কা কাটাতে পারেনি ফ্রান্স।

গণমাধ্যম তাই দেখছে বিশ্বকাপকে সেই ক্ষত প্রশমনের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে।

একটি পত্রিকা লিখেছে, “এখন প্রেক্ষাপট ভিন্ন। খেলোয়াড়রা পরিপক্ব হয়েছে এবং একজন কিলিয়ান এমবাপে আছেন”।

ফরাসী গণমাধ্যম এমন নানাভাবেই বিশ্লেষণ করছে।

একটি পত্রিকা লিখেছে ক্রোয়েশিয়ার চেয়ে চব্বিশ ঘণ্টা আগে সেমিফাইনাল খেলেছে ফ্রান্স এবং তারা নির্ধারিত সময়েই জয়লাভ করেছে।

গোল্ডেন বল জিতবে কে?

এবারের বিশ্বকাপকে অনেকেই মনে করেছিলেন দুই সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালডো আর লিওনেল মেসিই নিয়ন্ত্রণ করবেন।

অথচ তারা দুজনেই বিদায় নিলেন শেষ ষোলো পর্বেই।

আর এর মাধ্যমেই নতুন কারও জন্য গোল্ডেন বল জেতার সুযোগ তৈরি হয়ে যায়।

আজকের ফাইনালে সেটি নির্ধারিত হবে কি-না কে জানে।

যদিও গত ছয়টি টুর্নামেন্টে জয়ী দলের খেলোয়াড়ই পেয়েছিলো গোল্ডেন বল।

ক্রোয়েশিয়া মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ এবার অনেকেরই প্রশংসার তালিকায় রয়েছেন বিশেষ করে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে খেলা থেকে।

আবার আর্জেন্টিনাকেই ফিরিয়ে দিয়ে নিজের দক্ষতা দেখিয়েছেন এমবাপে।

যদিও কারও কার দৃষ্টিতে আছেন অ্যান্টনি গ্রিজম্যানও।

তাদের দুজনেরই রয়েছেন তিনটি করে গোল।

দুজনই জানেন ফাইনালের একটি হ্যাট্রিক তাদের নিয়ে যাবে গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে থাকা ইংল্যান্ডের হ্যারি কেইনের গোলসংখ্যার সমান পর্যায়ে।