বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের হাতে জিম্মি : ভিপি নুর

মঙ্গলবার রাত নয়টার কিছু আগে ফেসবুক লাইভে নুরুল হক নুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আজ মেরুদণ্ডহীন হয়ে পড়েছে। তারা ছাত্রলীগের হাতে জিম্মি। ছাত্রলীগের তোষামোদিতে ব্যস্ত। বারবার প্রতিবাদ সত্ত্বেও তারা কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারেনি।’

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে দেখতে গিয়ে মঙ্গলবার বিকালে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে অবরুদ্ধ হন নুরুল হক নূর। হল সংসদের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রলীগ নেতারা তাকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ ওঠে। প্রায় দুই ঘণ্টা তিনি সেখানে অবরুদ্ধ থাকেন।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নুর সেখান থেকে ছাড়া পান। এ সময় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় এবং ডিম ছুড়ে মারে ছাত্রলীগের কর্মীরা। তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন আহতও হন। পরে প্রতিবাদস্বরূপ নুর সহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।

নুর বলেন, ‘আজ আমাদের দুটি দাবি। আজকে ছাত্রলীগ যে ঘটনা ঘটিয়েছে এর বিচার করতে হবে। এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে। আরেকটি হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে অছাত্র ও সন্ত্রাসীদের বের করে দিতে হবে। আমরা চাই আজই হলে হলে অভিযান চালানো হোক।’

নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সিট দেয়ার দাবি জানিয়ে ভিপি নুর বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে উঠব না। দাবি আদায় করতে পারলে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফিরব। আদায় না করতে পারলে প্রয়োজনে লাশ হয়ে ফিরব। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় করেই ছাড়ব।’

ছাত্রলীগের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এরা সন্ত্রাসী সংগঠন। জোর করে শিক্ষার্থীদের মিছিল-মিটিংয়ে নেয়। আমরা এর প্রতিকার চাই। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করব।’

সাধারণ শিক্ষার্থীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, ‘আপনারা সোচ্চার হোন। অনেক নির্যাতিত হয়েছেন সন্ত্রাসীদের হাতে। এখন সময় এসেছে প্রতিবাদ করার।’

ডাকসু ভিপি বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে যেভাবে মেধার জোরে চান্স পাই তেমনি সিট পাওয়ার ক্ষেত্রেও মেধাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কোনো ছাত্র সংগঠনের করুণা বা কৃপায় সিট দেয়া যাবে না। জোর করে মিছিল-মিটিং করানোর অধিকার কোনো ছাত্র সংগঠনের নেই। তারা সন্ত্রাসী সংগঠন, তারা দখলদার সংগঠন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা চাই। শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক দাবির যথাযথ বাস্তবায়ন চাই।’