বিয়ের আসর থেকে তুলে নিয়ে প্রেমিককে বিয়ে

আসরে বসা বর অশোক যাদব (২৭)। প্রাথমিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে ‘সাত পাকের’র মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার আগ মুহূর্ত। ঠিক ওই সময় দামি ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি নিয়ে বিয়ের আসরে ঢোকেন তরুণী বর্ষা। হাতে পিস্তল, সঙ্গী কয়েকজন যুবক।
সামনে এগিয়ে বরের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বর্ষা বলেন, ‘এই লোকটা আমাকে ভালোবাসে, কিন্তু অন্য একজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করছে। আমি এটা হতে দেব না।’ পরে পিস্তলের মুখে অশোককে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান বর্ষা। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর দুজনকেই পুলিশ আটক করে।

এতক্ষণ যা পড়েছেন এটা কোনো চলচ্চিত্রের কাহিনী নয়। ভারতের উত্তর প্রদেশের বুন্দেলখন্ডে বাস্তবে এ কাণ্ড ঘটেছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস’র।

গত মে মাসের ঘটনায় আটক হয়ে ছিলেন ওই তরুণী। প্রতারণার অভিযোগে জেলে যেতে হয় আশোককেও। অবশেষে প্রেমিকের বিয়ে ভেঙে দিয়ে এখন তার সঙ্গেই ঘর বেঁধেছেন বর্ষা সাহু নামের ওই প্রেমিকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৫ মে বিয়ের আসর থেকে অশোক অপহরণ হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা হয়। বুন্দেলখন্ডের ভবানী গ্রামে যে মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, তারাই সম্পর্কের কথা গোপন করায় ওই মামলা করেন।

এ মামলায় হামিরপুর জেলা কারাগারে আটক থাকার পর গত ৪ জুলাই জামিন পান অশোক। মুক্তির দিন কারাগারের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন প্রেমিকা বর্ষা। পরে সেখানেই তারা ঘোষণা দেন, শিগগির বিয়ে করতে যাচ্ছেন তারা।
মামলা, আটক ও জামিনের ঝক্কি সামলে রোববার রাজ্যের হামিরপুরের একটি মন্দিরে বিয়ে করেন অশোক ও বর্ষা। বিয়েতে শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আট বছর ধরে অশোক ও বর্ষার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
এ বিয়ের পুরো আয়োজন সম্পন্ন করে শিবসেনার স্থানীয় একটি ইউনিট। রাজ্যের শিবসেনা সভাপতি রতন ব্রহ্মচারী ঘোষণা দিয়েছেন, তারা একটি সংস্থা খুলতে যাচ্ছেন। প্রেমিকদের কাছে থেকে প্রতারিত হওয়া মেয়েদের সহায়তা দেবে ওই সংস্থা। সংস্থার নাম হবে ‘রিভলবার রানি’। এর প্রধান হবেন বর্ষা।
বিয়ের পর বর্ষা বলেন, ‘আমি আনন্দিত। এই দিনটির জন্য আমাকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।’

‘প্রথমে বিয়ের আসর থেকে অশোককে অপহরণ করতে হয়েছে। পরে হামিরপুর জেলা কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে হয়েছে’ যোগ করেন ‘রিভলবার রানি’ খ্যাত এই প্রেমিকা।
প্রসঙ্গত, অপহরণের পর অশোকের পরিবার বর্ষার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না আনলেও অশোকের জামিন নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে বর্ষা নিজেই অশোকের জামিনের ব্যবস্থা করেন।

বিয়ের অনুষ্ঠানে অশোকের পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তবে বর্ষাকে বিয়ে করতে পেরে খুশি অশোক। তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন করে শুরু করবো।’