বি. চৌধুরীর পদত্যাগে বাধ্য করা নিয়ে ১৪ বছর পর মুখ খুলবেন মাহী

বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে (বি চৌধুরী) রাষ্ট্রপতি পদ থেকে বিএনপি-জামায়াতের পদত্যাগে বাধ্য করা নিয়ে মুখ খুলবেন তার ছেলে ও বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহী বি চৌধুরী।৩০ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়ে সেদিনকার অপমানের কথা জাতির সামনে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন তরুণ এ সংসদ সদস্য।

রোববার রাজধানীতে বিকল্পধারার নির্বাচিত দুই সংসদ সদস্যকে দলের পক্ষ থেকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।এদিন বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহী বি চৌধুরীকে দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ দুজন একাদশ সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের মনোনয়নের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

মাহী বি চৌধুরী বলেন, প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে বিএনপি-জামায়াত অত্যন্ত অপমানজনকভাবে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। আমি তখন সংসদ সদস্য থেকেও সংসদে এ নিয়ে কথা বলতে পারিনি।

পদত্যাগের পরও বি চৌধুরীকে বিএনপি প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করেছে অভিযোগ করে মাহী বি চৌধুরী বলেন, ২০০৪ সালে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। এর পরও প্রতিনিয়ত রাজনীতির শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে তারা অশ্লীল ভাষায় একতরফাভাবে অভিযোগ করে গেছে।

তিনি বলেন, আমি পার্লামেন্টে থেকেও সে অভিযোগ খণ্ডন করার সুযোগ পাইনি। আমাকে সেই সুযোগ দেয়া হয়নি। ১৪ বছর পর সংসদে ফিরছি। অনেক দিন চুপ ছিলাম। এবার ৩০ জানুয়ারি সংসদে গিয়ে সেদিনের অপমানের কথা বলব।

সেই সময়ে বি চৌধুরীকে নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মন্তব্যের সমালোচনা করে মাহী বলেন, ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে পদত্যাগের পর একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে নিয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন- ‘ষড়যন্ত্রের শেকড় উপড়ে ফেলেছি’। কিন্তু কী সেই ষড়যন্ত্র তা তিনি কখনও বলেননি। আমরা বলতে চাই- ষড়যন্ত্রের মূল নায়ক হিসেবে আপনি সেদিন কী কী ভূমিকা রেখেছিলেন সে বিষয়ে।

তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহী বি চৌধুরী বলেন, সেদিন আমি সংসদে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে মাননীয় স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে সেই সুযোগ দেয়া হয়নি। একটি শব্দ উচ্চারণও করতে দেয়া হয়নি। তখন বি চৌধুরীর বিরুদ্ধে ‘বেইমানির অভিযোগ’ এনে মিথ্যাচার করেছিলেন বিএনপি নেতারা।

পদত্যাগের পর পর বি চৌধুরীর বাড়িতে হামলার ঘটনা সংসদে তুলতে চাইলেও সে সুযোগ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। পরে মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে না যাওয়ায় বি চৌধুরীর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপির সংসদীয় দলের সভা। পরে ২০০২ সালের ২১ জুন বি চৌধুরী রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন।