বুড়িগঙ্গায় অভিযান পরিচালনা করা বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যানের বদলি

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর এম মোজাম্মেল হককে বদলি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন প্রেষণ-১ অধিশাখা উপসচিব মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বদলির আদেশ জারি হয়।তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন কমডোর এম মাহাবুব উল ইসলাম।

বুড়িগঙ্গায় উচ্ছেদ অভিযানের নয় দিনের মাথায় বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যানের বদলি হওয়া নিয়ে অনেকেই ধারণা করছেন, বুড়িগঙ্গার তীরে রাঘববোয়ালদের স্থাপনা উচ্ছেদের বলি হয়েছেন এয়ার কমোডর এম মোজাম্মেল হক।

জানা যায়, নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর নির্দেশে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের সব নদী ও খাল রক্ষায় এই ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে। উচ্ছেদের পর ফের দখল ঠেকাতে নদীর তীরে বনায়নের একটি প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়েছে।

আর অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে। তিনি বলেন, যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন; এবারের কর্মসূচিতে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে নদী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।

প্রথম দিন মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চলে। এ সময় ২টি ৭ তলা, ২টি ৫ তলা, ৩টি দুই তলা, ৪টি একতলা পাকা ভবনসহ ১৬৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

দ্বিতীয় দিনে ভাঙা পড়ে বুড়িগঙ্গার তীর দখল করে গড়ে ওঠা দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের শ্বশুরের অবৈধ বাড়ি। ওই বাড়িটি রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে বিফল হন কাজল।

আদালতের নির্দেশে বুড়িগঙ্গা তীরে অবৈধ দখল উচ্ছেদে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অভিযানে গত বুধবার ভাঙা পড়ে দুদকের আইনজীবীর শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তিটি।

কামরাঙ্গীরচরের ঝাউচরে তিন তলা এই বাড়ি ভাঙার কাজ শুরুর আগে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মোশাররফ হোসেন কাজল।

বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন সাংবাদিক বলেন, “ভবনটি অবৈধভাবে উঠানো হয়েছিল। ভবনটির মালিক পক্ষের মোশাররফ হোসেন কাজল ভাঙার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু কোনো ভ্যালিড কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।”

তবে কাজলের দাবি, “এটি ১৯৬১ সালে কেনা। এটা অবৈধ না, সব ধরনের দলিলপত্র আছে। কোনো ধরনের নোটিস ছাড়া এবং কাগজপত্র না দেখেই এটা ভেঙে ফেলে।।”

বিআইডব্লিউটিএ’র পদক্ষেপকে ‘বড় ধরনের অত্যাচার’ আখ্যায়িত করেন দুদকের আইনজীবী কাজল।

তিনি বলেন, “নদী তীরের সীমানা নির্ধারণ না করেই এটা করা হয়েছে। একটা বেকুব ম্যাজিস্ট্রেট কাজটা করেছে।”

বাড়ি ভাঙার বিষয়ে ক্ষতিপূরণের মামলা করবেন বলেও জানান আইনজীবী কাজল।