বুলডোজার চালিয়ে গণহত্যার আলামত ধ্বংস করছে মিয়ানমার

বুলডোজার চালিয়ে গণহত্যার প্রমাণ ধ্বংস করছে মিয়ানমার সরকার। গত বছর রাখাইনে সংঘটিত গণহত্যার আলামত ধ্বংসের চেষ্টা হিসেবে দেশটির সরকার বুলডোজার মেশিন ব্যবহার করছে বলে মানবাধিকার পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী আরাকান প্রজেক্টের তথ্যের ভিত্তিতে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বার্তাসংস্থা এপি ও রয়টার্সের অনুসন্ধানে রাখাইনে গণহত্যার ব্যাপক আলামত প্রকাশিত হওয়ার পর আরাকান প্রজেক্ট এ দাবি করলো। এর আগে মার্কিন ও ব্রিটিশ এ দুই বার্তাসংস্থার প্রতিবেদনে রাখাইনে স্থানীয় বৌদ্ধ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও গণকবর দেয়ার ভয়াবহ প্রমাণ উঠে আসে।

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার তীব্র সমালোচনার মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা গণহত্যায় জড়িত সাত সেনাসদস্যসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করে। দেশটির সরকার বলছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইনে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতার তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে আরাকান প্রজেক্ট। সংস্থাটি ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানকে বুলডোজারে ধ্বংসের আগের ধারণ করা রাখাইনের গণকবরের একটি ভিডিও দিয়েছে।

এতে দেখা যায়, জঙ্গলের মাটিতে অর্ধ-পুতে রাখা তেরপলের অনেকগুলো ব্যাগ। এসব ব্যাগের একটি থেকে অর্ধগলিত একটি পা বেরিয়ে এসেছে।

আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লিওয়া বলেছেন, গণকবরের আলামত স্থায়ীভাবে ধ্বংসের চেষ্টা হিসেবে বুলডোজার ব্যবহার করছে মিয়ানমার সরকার।

‘আমরা দুটি গণকবরের স্থানের ব্যাপারে জানি; যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার অপর একটি গণকবর বুলডোজার দিয়ে মুছে ফেলা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, হত্যার আলামত ধ্বংস করা হচ্ছে।’

‘প্রাইভেট কোম্পানিগুলো বুলডোজার ব্যবহার করছে। তারা সেন্ট্রাল মিয়ানমার থেকে এসেছে, রাখাইন থেকে নয়। এটা স্পষ্ট যে সরকারের আদেশেই এসব ঘটছে।’

গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনের মং নু ও বুথিডংয়ে গণকবরের সন্ধ্যান পাওয়া যায়। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটও ওয়াচ বলছে, রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছে, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধদের হাতে মারপিট, ধর্ষণ, ছুরিকাঘাত ও হত্যার শিকার হচ্ছে।