বৃষ্টিতে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি

নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুড়িগুড়ি ও মাঝারি ধরণের বৃষ্টি হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরো অগ্রসর হয়ে উপকূলীয় ভোলা জেলার আশপাশে অবস্থান করছে। এটি আরো অগ্রসর হয়ে স্থলভাগের দিকে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে সোমবার ভোর থেকেই রাজধানীতে থেমে থেমে, কখনও হালকা, আবার কখনও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিস, আদালতমুখী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। বৃষ্টির কারণে পানি জমে যাওয়ার ফলে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর অপেক্ষাকৃত নিচু স্থানগুলোতে হাটুপরিমাণ পানি জমে গেছে। সেই পানিতে ভাসছে নোংরা-আবর্জনা। বিশেষ করে নগরীর শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, আরামবাগ, বাড্ডা, রামপুরা ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ বেশ কিছু স্থানে পানি জমে গেছে। যার ফলে যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি বেড়েছে।

তবে রাজধানীর অন্য যে এলাকাতে যেমন ভোগান্তিই থাকুক না কেন, মালিবাগ, শান্তিনগর ও মালিবাগ রেলগেইট এলাকায় যে ভোগান্তি হয়, তার সঙ্গে অন্য কোনো এলাকার তুলনা চলেনা। পায়ে হেঁটে অথবা গাড়িতে , বৃষ্টি হলে এই সড়ক ধরে চলতে গেলে যন্ত্রণার অন্ত নেই।

মগবাজার ফ্লাইওভার নির্মাণ হচ্ছে বলে মালিবাগ, শান্তিনগর ও মালিবাগ রেলগেইট সংলগ্ন সড়কটি গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় আছে। মূল সড়কটি প্রায় সারা বছর ড্রেনের পানিতে তলিয়ে থাকে। আর বৃষ্টি হলে সেই জমে থাকা পানির পরিমাণ দাঁড়ায় হাঁটু সমান। তার ওপর ফুটপাত রয়েছে হকারদের দখলে। যে কারনে চলাচলে সর্বসাধারণকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, মগবাজার মোড় থেকে শুরু করে মৌচাক, মালিবাগ ও শান্তিনগর এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। পুরো এলাকার রাস্তায় জমেছে প্রচুর কাদাপানি। সেই সঙ্গে স্যুয়ারেজের পানি উপচে পড়ছে। তার অপোড় ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলছে। ভোগান্তি মেনে নিয়েই প্রত্যেকে নিজ নিজ কর্মস্থলে ছুটছে সেই এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা।

একটু এগিয়ে মৌচাক মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, পুরো রাস্তা জুড়েই কাদাপানি জমে আছে। এর মধ্যেই নির্মাণ কাজ চলছে। হকারদের দখলে রাস্তার দুই পাশে ফুটপাথ। সাধারণ মানুষের জন্য একটু জায়গাঁও নেই। এই এলাকায় চলাচলের জন্য রিকশা বা অন্য কোনো যানবাহনে চড়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কেউ এগুলো ব্যবহার না করলে অবশ্যই তাকে কাদাপানি মাড়িয়ে চলতে হবে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি বয়ে যাবে। এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরার এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর ওপর দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস বয়ে যেতে পারে।