বেঁধে দেওয়া দামকে পাত্তা দিচ্ছে না মাংস বিক্রেতারা

মাংস বিক্রেতারা সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া দামকে পাত্তা না দিয়ে নিজেদের মতো দামে গরুর মাংস বিক্রি করছেন। বেঁধে দেওয়া দামকেই বেশি বলছিলেন ক্রেতারা। অসহায় হয়ে এবার কেনাও কমিয়ে দিয়েছেন।

২৩ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন রমজান মাসে বিক্রির জন্য মাংসের দাম নির্ধারণ করে দেয়। সেখানে গরুর মাংসের দাম করা হয় ৪৭৫ টাকা কেজি; যা গত রমজান থেকে ৫৫ টাকা বেশি। উত্তর সিটি করপোরেশনও এই দামে সম্মতি জানায়। কিন্তু এরপরেও বেঁধে দেওয়া দাম মানা হচ্ছে না।

শনিবার ও রোববার কয়েকটি বাজার ও দোকান ঘুরে দেখা যায়, ৫০০ টাকার নিচে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে না। ধানমন্ডির ‘মাংস ঘর’ নামে এক দোকানের মালিক আতাহার আলী গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৫২০ টাকায়। সিটি করপোরেশনের দামের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমরা করপোরেশনের দোকান না। হেরা যা কয় কউক। আমি এই দামেই বেচি।’ মধুবাজারের এক মাংসের দোকানে দাম জিজ্ঞেস করছিলেন রেহানা আক্তার। দোকানি ৫৫০ টাকা চাইলে দরদাম করে ৫৩০ টাকা কেজি কেনেন। তবে রেহানা আক্তার বেঁধে দেওয়া দামের ব্যাপারে জানেন না।

মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে বেশ কয়েকটি দোকান আছে। এখানে গরুর মাংসের দাম ৪৯০ টাকা থেকে ৫১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মো. সোবহান নামের একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, গরু তাঁদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এখানে বাজার করতে আসা তারেক মাহমুদ বলেন, ‘মাংস খাওয়াই বাদ দিতে হবে। সিটি করপোরেশন যে দাম বেঁধে দিছে, সেটাই তো বেশি। এক কেজি মাংস যদি ৫০০ টাকা হয়, তাহলে বাকি আর কিছু খাওয়া লাগে না।’

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে দাম রাখা হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায়। এখানেও বিক্রেতারা বলছেন, গরু কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে গরুর মাংস কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ কিছুটা কম। বিক্রেতারাও বলছেন, গতবারের তুলনায় এবার রোজার শুরুতে মাংস কম বিক্রি হয়েছে।

তবে সুপার শপে নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে। ‘মিনা বাজার’ ও ‘স্বপ্ন’তে ৪৭৫ টাকা কেজি গরুর মাংস। বাজারের মধ্যে হাতিরপুল বাজারে বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে। মিরপুর-১ নম্বরের শাহআলী কাঁচাবাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান বলেন, তাঁরা বিক্রেতাদের বলে দিয়েছেন নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে।

মাংস ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, ‘দক্ষিণ সিটিতে আমরা এই দামে বিক্রির চেষ্টা করছি। কিন্তু উত্তর সিটির সহযোগিতা লাগবে।’ তিনি আরও বলেন, গাবতলীতে তাঁদের সমিতির অফিস তালাবদ্ধ। খুলে না দেওয়ায় তাঁরা মনিটর করতে পারছেন না। এ ছাড়া খাজনা বেশি আদায়ের কথাও বললেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সমিতি এখনো তাঁদের ব্যবসায়ীদের তালিকা দেয়নি। আর খাজনা নিয়েও অভিযোগ নিয়ে আসেনি। খাজনার রশিদসহ নিয়ে এলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেব।’ তিনি প্রধান নির্বাহী ও ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাউল ইসলাম বলেন, তাঁরা কাউন্সিলরদের দিয়ে মনিটর করছেন। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের অধীন মার্কেটগুলোর দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে জানান। ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদ আনোয়ার বললেন, সোমবার থেকে তাঁরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।