বেতন-ভাতা বাড়লেও কর্মকর্তাদের কাজের গতি বাড়েনি

জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেছেন, বেতন-ভাতা বাড়লেও সরকারি কর্মকর্তাদের কাজের গতি বাড়েনি। এরা বুয়েট বা মেডিকেলে চান্স না পেয়েও তদবিরের জোরে আজ সচিব। সে কারণে প্রশাসন স্থবির হয়ে পড়েছে।

সোমবার জাতীয় সংসদে ৭১ বিধিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।

এ সময় শুধু প্রশাসন ক্যাডারের কর্মীদের নয়, দেশের বিভিন্ন পেশার যোগ্য কর্মী বিশেষ করে চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, এদের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রমোশন দেবার জন্য একটি আলাদা কমিটি গঠনের আহ্বান জানান রুস্তম আলী ফরাজী।

তিনি বলেন, আমরা কোনো মন্ত্রীকে কোনো কাজের জন্য ডিও লেটার দিলে বা সংসদে কোনো মন্ত্রী কোনো কাজের প্রতিশ্রুতি দিলে তা এত বিলম্বে পাস করা হয় যে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কাজ তো মন্ত্রীরা করেন না। করেন তার সচিব বা উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কিন্তু তারা সঠিকভাবে কাজ করতে চান না। দেখা যাবে বহুদিন অতিবাহিত হলেও অনেক ফাইল আছে তাতে কোনো কাজই হয়নি। কিন্তু আগে কর্মকর্তারা ডেডিকেটেটভাবে কাজ করতেন। এখন শত শত সচিব-সিনিয়র সচিব রয়েছেন, তারা অনেকেই কাজ করেন না, আবার অনেকেই কাজ জানেনও না। সচিবালয়ে নিচের দিকের কর্মকর্তা কম কিন্তু ওপরে বেশি!

তিনি আরও বলেন, অনেকে তদবিরের ঠেলায় ওপরের দিকে গিয়ে কাজ করেন না অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে। সে কারণে বর্তমানে প্রশাসন স্থবির হয়ে পড়েছে। বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দেবার পরেও তাদের কাজের গতি বাড়েনি। এরা বুয়েট বা মেডিকেলে চান্স না পেয়েও তদবিরের জোরে আজ সচিব। অথচ তাদেরই বন্ধু যারা মেডিকেল পড়ে ডাক্তার হয়েছেন তারা হয় সিনিয়র মেডিকেল অফিসার বা বড়জোর আরএমও পর্যন্ত যেতে পরেছেন। তারা যোগ্যতা অনুযায়ী সেখানে যেতে পারছেন না। প্রকৌশলীদের ক্ষেত্রেও একরকম। তারা এখন কোনো কাজের জন্য তাদেরও সমসাময়িক বন্ধুদের অফিসে এসে জো হুজুর বলে দাঁড়িয়ে থাকেন। এটা হতে পারে না। এটা খুবই দৃষ্টিকটু।

ফরাজী বলেন, প্রকৌশলী, ডাক্তার, কৃষিবিদদের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রমোশনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তাদেরকেও একটা পর্যায়ে সচিব, সিনিয়র সচিব পর্যায়ে প্রমোশনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তা না হলে তারা কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলবেন। প্রশাসনে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। তারা আজ হতাশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে দেশের এসব মেধাবী সন্তান, প্রকৌশলী, ডাক্তার, কৃষিবিদদের জন্য একটা আলাদা কমিটি করে কীভাবে তাদের যোগ্য প্রমোশন দেয়া যায় তার একটি রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন। এসব বৈষম্যের একটি অবসান হওয়া প্রয়োজন।’

এটা কীভাবে করা যায় তার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।