‘বৈধ এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক যাবে মালয়েশিয়ায়’

জি-টু-জি-প্লাস পদ্ধতিতে ১০টি এজেন্সির বদলে সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে মালয়েশিয়া সফররত বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের দু’দফা বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রাজায়ায় দু’দেশের মধ্যে বৈঠক হয়। কর্মী-সংক্রান্ত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী কুলা সেগারান নেতৃত্ব দেন।

দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের অচলাবস্থা কাটাতে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্মসচিব) মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর।

দেশটিতে দশ লাখের বেশি কর্মী কাজ করছে। গেল দেড় বছরে দেশটিতে এসেছে দুই লাখের মতো কর্মী। জি-টু-জি প্লাস পদ্ধতিতে এই কর্মী আসলেও ১ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যায় এর অনলাইন সিস্টেম এসপিপিএ।

প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মদের আগের ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের বৈধ সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। কুয়ালালামপুরে মন্ত্রী আর জানান, যারা অবৈধ আছে এবং দশ বছরের বেশি ভিসা দেয়ার বিষয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

জানা গেছে, নতুন অনলাইন সিস্টেম চালুর আগে পাইপ লাইনে থাকাদের ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে সকল কাজ চলবে। যোগ্য সকল এজেন্সি এই সুযোগ পাবে।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মুহা. শহীদুল ইসলাম জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সেলিম রেজা, অতিরিক্ত সচিব ড. মনিরুস সালেহিন (কর্মসংস্থান), মন্ত্রীর একান্ত সচিব, উপ-সচিব মোহাম্মদ সাহিন (কর্মসংস্থান), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি ও একজন উপ-সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন প্রতিনিধি, আইন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব, দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো. সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

এমওইউ মোতাবেক দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে বৈঠক করেন তারা।
এদিকে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনলাইন সিস্টেম এসপিপিএ ১ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায়। কথা ছিল পাইপলাইনে থাকা কর্মীদের সব কাজ চলবে। কিন্তু এখন চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে দেয়া হচ্ছে না ভিসার সত্যায়ন। বন্ধ আছে ঢাকায় মালয়েশিয়ান হাইকমিশনের ভিসা স্ট্যাম্পিংও।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা ১ হাজার ১৭৯টি। ২০১২ সালে দুই দেশ শুধু সরকারি মাধ্যমে জি টু জি পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে চুক্তি সই করে। ২০১৬ সালের তা পরিমার্জন করে ১০টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জি টু জি প্লাসের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের শেষের দিক থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ শ্রমিক মালয়েশিয়া গেছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে জুলাই মাস পর্যন্ত ১ লাখ ৯ হাজার ৫৬২ জন শ্রমিক পাঠায় বাংলাদেশ।