ব্যর্থ অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে আবেগাপ্লুত এরদোয়ান

তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে হাজার হাজার সমর্থকের সামনে আবেগী বক্তব্য দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এ সময় তিনি অভ্যুত্থানকারীদের ঠেকিয়ে দেওয়া জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় সময় শনিবার রাতে বসফরাস প্রণালির সংযোগ সেতুসংলগ্ন এলাকায় দেওয়া জনস্রোতের সামনে বক্তব্য দেন এরদোয়ান।

অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সেদিন রাতে (গত বছর) মানুষের হাতে বন্দুক ছিল না। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল তাদের বিশ্বাস।’

‘আমি আমার জাতির প্রত্যেক সদস্যের কাছে কৃতজ্ঞ, যারা তাদের দেশকে রক্ষা করেছিল।’

২৫০ জন মানুষ জীবন দিয়ে দেশকে রক্ষা করে গেছেন উল্লেখ করে এরদোয়ান বলেন, ‘অভ্যুত্থানকারীরা গত বছর এই রাতে সেতুটি বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছিল যে তুরস্ক এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ সেদিন দেশের সম্মানে রাস্তায় নেমে তাদের রুখে দেয়। তারা বিশ্বাসঘাতকদের ঘাড় মটকে দিয়েছে।’

অভ্যুত্থানকারী সেনাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পক্ষে জোর সমর্থন দিয়ে জানান, তাদের গুয়ানতানামো কারাগারের বন্দিদের মতো পোশাক পরানো উচিত।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি এই অভ্যুত্থানকারীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি (বিনালি) বলেছিলেন, ‘আদালতে তোলার সময় তাদের যেন গুয়ানতানামোর বন্দিদের মতো পোশাক পরানো হয়।’

গত বছরের ১৫ জুলাই তুরস্কে সেনাদের একাংশের অভ্যুত্থানচেষ্টায় ২৫০ জন নিহত হন, আহত হন আরো দুই হাজার ১৯৬ জন। ব্যর্থ এই অভ্যুত্থানে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে দেড় লক্ষাধিক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে তুরস্ক সরকার।

অভ্যুত্থানচেষ্টায় সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে ৫০ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাকে ভিন্নমত দমনের কৌশল হিসেবে দেখছেন সমালোচকরা।

বার্ষিকীতে দেওয়া বক্তব্যে ১৫ জুলাইকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন এরদোয়ান।

একই অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ইলদিরিম ১৫ জুলাইকে ‘দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ’ হিসেবে অ্যাখা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এক বছর আগের এই রাতটি ছিল ভয়াবহ, বিভীষিকাময়। এ রাত ছিল দীর্ঘ, একটি ঝলমলে রোদ্রৌজ্জ্বল দিনে প্রবেশের আগমুহূর্ত।’