‘ব্যাংকে জালিয়াতির কোনো ঘটনায় ছাড় দেয়া হয়নি’

ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতির যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার কোনোটিতেই ছাড় দেয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, কিছু ঘটনায় তদন্ত চলছে, কিছু মামলা চলমান। বহু মানুষ জেলে আছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক কর্মশালায় অংশগ্রহন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘তৈরি পোশাক শিল্পের সম্প্রসারণ এবং সহজীকরণ’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

তবে সেমিনার শেষে সাংবাদিকরা মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখেন ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতি নিয়ে। গত কয়েক বছর ধরেই ব্যাংকে বেশ কিছু ঋণ জালিয়াতি নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। ব্যাংক থেকে এক লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে মেরে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে বহু জনের খোঁজই পাচ্ছে না ব্যাংক।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যদিও এ খাত নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কথা বলার কথা। তারপরও সরকারে আছি, তাই আমাদেরও কথা বলতে হয়। আমরা আশা করব, অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যাংক খাত নিয়ে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

অনিয়মের কোনো ঘটনায় সরকার ছাড় দেয়নি জানিয়ে তোফায়েল বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন পর‌্যন্ত যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তার সবগুলোতে মামলা হয়েছে। অনেকেই দুদকের তদন্তের সম্মুখীন হয়েছেন। অনেকেই জেলে আছেন, আমরা কিন্তু কাউকেই ছাড় দিচ্ছি না। ’

ব্যাংক লোনেই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শিল্পায়নের যে অগ্রগতি তা ঋণের টাকাতেই হয়েছে। কিন্তু দেখতে হবে ঋণের বিপরীতে যথেষ্ট পরিমাণ জামানত রাখা হয়েছে কি না। ঋণের টাকা ফিরে আসছে কি না।’

‘আমরা তো ঋণ দিতে তদবির করি না, দালালি করি না। ত্রুটি নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি এর ভালো দিকটাও তুলে ধরা উচিত।’

ব্যাংকের এই অনিয়ম কেবল বাংলাদেশে হচ্ছে না-সেটিও জানিয়ে দেন মন্ত্রী। বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত এখন বৈশ্বিকভাবেই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ব্যাংকিং খাতে ঋণ অনিয়ম অনেক দেশেই হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, আমাদের এখানেও হচ্ছে।’

অর্থপাচারের নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। অর্থপাচার বিষয়ে পানামা পেপারস ও বিভিন্ন গণমাধমে যাদের নাম পাওয়া যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

‘যারা মানি লন্ডারিং করছে তারা বিচারের সম্মুখীন হবেন। অনেকে তো জেলেও আছেন। এখানে ব্লেম গেম খেলার সুযোগ নেই। সরকার এখানে চুপ থাকতে পারে না। অর্থমন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।’

বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, বিআইডিএস এর সিনিয়র ফেলো নাজনিন আহমেদ প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।