ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্থগিত তিন কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের আশুগঞ্জে স্থগিত হওয়া তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে।

বুধবার সকাল ৮টা থেকে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়, একটানা চলছে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এই তিন কেন্দ্রে ২০টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে।

তিন কেন্দ্রগুলো হলো- যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোহাগপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। এ তিনটি কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৫৭৪।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকায় চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়া যায়নি।

ভোটার সংখ্যা হিসেবে ওই তিন কেন্দ্রের ভোটেই নির্ধারণ হবে বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূইয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিনের ভাগ্য।

তিনটি কেন্দ্রই আশুগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আর মঈন উদ্দিনের বাড়ি একই উপজেলার তালশহর গ্রামে।

ওই আসনে ১২৯ কেন্দ্রের ফলাফলে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে আবদুস সাত্তার ভূইয়া পেয়েছেন ৮২ হাজার ৭২৩ ভোট। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিন ‘কলার ছড়ি’ প্রতীকে পেয়েছেন ৭২ হাজার ৫৬৪ ভোট। মঈনকে জয়ের জন্য তিন কেন্দ্রের সবকটি ভোট পেতে হবে।

তিনটি কেন্দ্রকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রগুলোর প্রতিটিতে ১১৩ জন করে ৩৩৯ জন পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এছাড়াও চট্টগ্রাম বিভাগের পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) রোকন উদ্দিন নির্বাচনের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছেন।

পাশাপাশি নির্বাচনের সব কাজ সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে কিনা- এসব দেখার জন্য নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল বাতেন, উপসচিব সাহেদুন্নবী চৌধুরী ও মঈন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অবস্থান করছেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, আশুগঞ্জ উপজেলার বাহারদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সোহাগপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন মারামারি ও কেন্দ্র বন্ধ থাকার কারণে ১ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন থেকে কেন্দ্রগুলোতে পুনঃভোটের জন্য ৯ জানুয়ারি সময় বেঁধে দেয়া হয়।

সেই অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়। ভোটগ্রহণে কেন্দ্রগুলোতে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ২০ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ৪০ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হায়াত-উদ-দৌলা-খাঁন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইও-১) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, তিনটি কেন্দ্রে ৩৩৯ জন পুলিশ, ৩৬ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১১৩ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। ৭টি স্ট্রাইকিং ফোর্স (দাঙ্গা প্রতিরোধ দল) ও ১৩টি ভ্রাম্যমাণ দল মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া ২১ জন আনসার সদস্য প্রস্তুত থাকবে। ১৩ জন আর্ম ব্যাটালিয়ন সদস্যও দায়িত্বপালন করবেন। এছাড়াও দুই প্লাটুন বিজিবি ও ৩ গাড়ি র‌্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হায়াত-উদ-দৌলা-খাঁন বলেন, ১২ জন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং তিনজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকও তিন কেন্দ্রে মোতায়েন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।