বয়স ৪০ হলেই যে পরিবারের সবাই অন্ধ হয়ে যায়

ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার আটলিয়া গ্রামে একই পরিবারের এক শিশুসহ ১১ জন চোখের রোগে ভুগছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন সদস্য পুরো অন্ধ হয়ে গেছে। তারা স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়েছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, পূর্বে এই পরিবারে ৩৫-৪০ বছর বয়স হলে চোখের সমস্যা দেখা দিত। তবে বর্তমানে ১০ বছরের শিশুর চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই সমস্যায় পরিবারের লোকজন চরম চিন্তিত হয়ে পড়ছেন। নানা কষ্টের মধ্যে পরিবারের লোকজন জীবন যাপন করছেন। জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের আটলিয়া গ্রামে মৃত. ইয়াছিন মোল্লার ৪ ছেলে এবং এক মেয়ে।

তারা হলেন- শহিদুল ইসলাম (৬৫), মফিজুল হক (৫৫), আবুল হোসেন (৫০), মনুমিয়া (৪৩) এবং একমাত্র মেয়ে কুলসুমা বেগম (৬৭)। এদের মধ্যে ছেলেরা অন্ধ হয়ে স্বাভাবিক চলাচলের ক্ষমতা হারিয়েছেন। আর মেয়ে কুলসুমা বেগম অন্ধ হয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বার্ধক্য হয়ে বছর খানেক আগে মারা গেছে।

এ ছাড়া শহিদুল ইসলামের ৩ মেয়ে। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে মুর্সিদা খাতুন (৪০) অন্ধ হযে গেছে। দুই মেয়ে শহিদা বেগম (৩৫) এবং মাসুদা বেগম (৩২) কোন রকম চোখে ঝাপসা দেখে চলতে পারেন। বড় মেয়ে মুর্সিদা খাতুনের বিয়ে হলেও দীর্ঘ দিনের অসুস্থ তার কারণে স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে বাড়িতেই আছেন। মফিদুল ইসলামের রয়েছে ২ ছেলে এবং ৪ মেয়ে। এদের মধ্যে বড় মেয়ে রুপভান (৩৬) এবং মেঝে মেয়ে রশিয়া খাতুন (৩৩) কোনো রকম দেখছেন। আবার মনুমিয়ার ছেলে ইব্রাহিমের ছেলে শাকিব হোসেন (১০) ৩য় শ্রেণির ছাত্র চোখের সমস্যায় ভুগছেন। একই পরিবারের ৩ জন সদস্য অন্ধ এক শিশুসহ ১১ জন চোখের রোগের বিষয়টি সচেতন গ্রামবাসীর মনে প্রভাব পড়ছে। অন্ধ হয়ে স্বভাবিক চলাচলের ক্ষমতা হারিয়েছেন শহিদুল ইসলাম।

তিনি জানান, নানা কষ্টের মধ্য দিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। এতো আর বেঁচে থাকা বলে না। নানা কষ্টে দিন কাটে। আবুল হোসেন জানান, নিজেদের চাষের কোনো জায়গা জমি নেই। অন্যের জমিতে ছেলেরা শ্রমিকের কাজ ও লিজ নিয়ে চাষ করে কোনো রকম সংসার চলে। গ্রামবাসী আলি আকবর জানান, শহিদুল ইসলাম, মফিজুল হক, আবুল হোসেন, মনুমিয়া আমরা সব একই বয়সের। জন্ম থেকে কেউই অন্ধ নয়। ৩৮-৪০ বছর বয়স হলে চোখের সমস্যা দেখা দেয। এটা বংশগত সমস্যা বলে তিনি মনে করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার মো. গোলাম রসুল বলেন, বিষয়টি আমিও তো ভাই দেখেছি। চেষ্টা করেছি তাদের জন্য কিছু করার। কিন্তু আমার কোনো কাজেরই গুরুত্ব পাচ্ছে না।