ভাঙছে বিএনপি জোটের ঘর, নতুন নামে আসছে জামায়াত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবির পর ঘর ভাঙছে বিএনপি-জামায়াত জোটের। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিপর্যস্ত দলটি নতুন নামে রাজনীতির মাঠে আবির্ভূত হওয়ার পরিকল্পনা করছে।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। সম্প্রতি দলটির মজলিসে শূরায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জামায়াতের মাঠ পর্যায়ের নেতাদের দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জামায়াতে ইসলামীর মজলিশে শূরার বৈঠক হয়। সারা দেশের ১৩টি অঞ্চলে আলাদাভাবে একইদিনে শূরার সদস্যরা বৈঠক করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এ বৈঠকে জামায়াতের বর্তমান নাম পরিবর্তন করার প্রস্তাবও করেন শূরা সদস্যরা।

তবে নাম কি হবে বা কবে নাগাদ নতুন নাম আসবে- তা কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। জামায়াতের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

এদিকে জামায়াতের বিএনপি জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত এবং নতুন নাম ধারণের পেছনে দলটির নিষিদ্ধ হওয়ার আশঙ্কাই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, জামায়াত নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া চলছে। নিষিদ্ধ হওয়ার এ আশঙ্কা থেকেই বিকল্প উপায় খুঁজছে জামায়াত। তারই ধারাবাহিকতায় জোট ছাড়া এবং নতুন নাম ধারণের পথে হাঁটছে দলটি।

পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ও অস্তিত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম বর্তমান নাম পরিবর্তনের চিন্তা করছে। এই প্রস্তাবটি করেছে দলটির শূরা সদস্যরা।

জানা গেছে, জামায়াত ইসলামীর তরুণ নেতাদের বেশিরভাগই চায় নতুন নামে আসুক জামায়াত। অতীত ভুলের জন্য প্রয়োজনে ক্ষমা চেয়ে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধের চেতনায় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকুক। তাদের যুক্তি হচ্ছে-নাম বদলালে জামায়াত ক্ষতিগ্রস্ত নয়, বরং লাভবানই হবে।

যুদ্ধাপরাধের তীর আর তাদের বিদ্ধ করতে পারবে না। সব গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন দেশে নতুন ভাবে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ হবে। বিএনপিসহ অন্য সব বিরোধী দলগুলোর যেখানে রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার পথে সেখানে নতুন নামে জামায়াত বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের মেলে ধরতে পারবে।

যুক্তি দেখানো হয়, দলটিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হতে পারে। নাম পরিবর্তন করা হলে পরিস্থিতি মোকাবেলা তুলনামূলকভাবে সহজ হবে। তবে কোনো কোনো সদস্য দলের নাম বদলের বিপক্ষে প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদে, সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।