ভারতীয় বিচার বিভাগে নজিরবিহীন ঘটনা, জরুরি বৈঠকে মোদি

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের চার জন বিচারক প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, যেভাবে তিনি আদালত চালাচ্ছেন তা ভারতের গণতন্ত্রকেই হুমকির মুখে ফেলে দেবে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা এভাবে প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা ভারতীয় বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা।

সংবাদ সম্মেলনে এই বিচারকরা বলেছেন, ভারতের প্রধান বিচারপতি এখন তার ব্যক্তিগত মর্জিমাফিক বিভিন্ন বেঞ্চে মামলা পাঠাচ্ছেন। এটি আদালতের নিয়মকানুনের লংঘন।

তারা আরও বলেছেন, আদালতের নিয়ম-কানুন যদি মানা না হয় তাহলে ভারতে গণতন্ত্র টিকবে না।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন না। চারজন বিচারক যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেটিও এক নজিরবিহীন ঘটনা।

অতীতে কখনোই বিচারকরা সরাসরি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি যাতে করে আদালতে বিচার কাজ পরিচালনায় তাদের নিরপেক্ষতা কোনভাবেই ক্ষুন্ন না হয়।

ভারতের বিচার বিভাগকে ঘিরে তৈরি এই অভূতপূর্ব সংকটের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর আইনমন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন।

সুপ্রিম কোর্টের এই চার ক্ষুব্ধ বিচারক একটি চিঠিও বিলি করেছেন যেটি তারা এর আগে প্রধান বিচারপতিকে দিয়েছিলেন। চিঠিতে তারা বেশ কিছু বিচারিক নির্দেশের ব্যাপারে তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, এর ফলে ভারতে বিচার বিভাগের সার্বিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে।

তারা বলেছেন, যেসব মামলার ফল ভারতের রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সুদুরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হয়, প্রধান বিচারপতি সেই সব মামলা বেছে বেছে তার পছন্দসই কিছু বেঞ্চে পাঠান।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর কাছে এসব বিষয়ে বার বার তাদের উদ্বেগ তুলে ধরার পরও তিনি কর্ণপাত করেন নি বলে অভিযোগ করে এই চারজন বলছেন, এরপর জাতির সামনে হাজির হওয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন বিকল্প ছিল না।

কোন কোন মামলা এভাবে প্রধান বিচারপতি তার পছন্দসই বেঞ্চে পাঠিয়েছেন সেটি তারা উল্লেখ করেন নি। তবে ভারতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক জল্পনা রয়েছে যে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির দুর্নীতির বিষয়টি এর একটি। গত বছরের অগাষ্টে এই ঘটনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের ভেতর চলতে থাকা এই টানাপোড়েন প্রকাশ্যে নিয়ে আসে।-বিবিসি