ভারতের ৭ প্রতিষ্ঠান থেকে বিস্ফোরক সংগ্রহ করে আইএস!

ভারতের সাতটি প্রতিষ্ঠান মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) বিষ্ফোরক দ্রব্য সরবরাহ করে। আইএস এর কাছে মোট ২০টি দেশ অস্ত্র এবং বিভিন্ন সামরিক রসদ যায়। অস্ত্র সরবরাহে সবচেয়ে বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তুরস্কের। এরপরই ভারতের অবস্থান।

সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ হামলার ঘটনায় এই সংগঠনটি দায় স্বীকার করেছে।

তবে ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলো এমন তথ্য অস্বীকার করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভিত্তিক একটি স্টাডি গ্রুপের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এই সংবাদ প্রকাশের পর দেশটিতে হইচই পড়ে গেছে।

‘কনফ্লিক্ট আর্মামেন্ট রিসার্চ’ (সিএআর) নামের স্টাডি গ্রুপ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সিএআর প্রায় ২০ মাসের চেষ্টায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানিয়েছে, সিরিয়া এবং ইরাকে আইএস যেসব অস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে যুদ্ধ করছে তার মধ্যে বিশ্বের ২০টি দেশের ৫১টি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা অন্তত ৭০০ এমন ধরনের উপাদান রয়েছে। যেসব উপাদান ‘ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস’ বা আইইডি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়৷

২০টি দেশের তালিকায় তুরস্ক, ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রোমানিয়া, রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, চীন, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া আর চেক প্রজাতন্ত্রের মতো দেশের নামও রয়েছে। সিএআর জানিয়েছে, ২০টি দেশের ৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তুরস্কেরই ১৩টি।

আর আইএসকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রসদ সরবরাহ করার সঙ্গে জড়িত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৭টি। সরবরাহ করা রসদগুলো লেবানন বা তুরস্ক হয়ে আইএস-এর কাছে পৌঁছায়।

বেআইনিভাবে পেট্রোলিয়াম বিক্রি আইএস-এর আয়ের প্রধান উৎস। সিরিয়া ও ইরাকে বেশ কিছু বড় তৈলকূপ আপাতত তাদের দখলে। মূলত তুরস্কের মধ্য দিয়েই তারা চোরাচালানের কাজ চালিয়ে থাকে। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, কালোবাজারে তেল বিক্রি করে আইএস-এর মাসে প্রায় ৪ কোটি ডলার আয় হয়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদক ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। চারটি প্রতিষ্ঠান এমন কাজের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে। তারা জানায়, লেবানন বা তুরস্কে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো বিস্ফোরক বা বিস্ফোরক তৈরির উপযোগী দ্রব্য সরবরাহ করার তথ্যটি সম্পূর্ণ অসত্য।

দুটি প্রতিষ্ঠান অবশ্য স্বীকার করেছে, তারা কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ‘ফিউজ’ বা ডেটোনেটিং কর্ড-এর মতো কিছু জিনিস সরবরাহ করে থাকে। তবে প্রতিষ্ঠান দুটির দাবি, সরবরাহকৃত রসদ শেষ পর্যন্ত কোথায় যায়, কে বা কারা সেগুলো ব্যবহার করে তা তাদের জানা নেই।

ইরাকের রাবিয়া, কিরকুক, মসুল ও তিকরিত এবং সিরিয়ার কোবানি শহরে আইএস যোদ্ধাদের ফেলে যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ২০টি দেশের ৫১টি প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততার কথা জানতে পেরেছে সিএআর। সিএআর-কে তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করেছে ইরাকের কেন্দ্রীয় পুলিশ সংস্থা ও সিরিয়ার ওয়াইপিজিসহ আরো কিছু কুর্দি সংগঠন।