ভারতে নিষিদ্ধ হল তাৎক্ষণিক তিন তালাক, মুসলিম নারীদের মিষ্টি বিতরণ

কোনও প্রকার সংশোধনী ছাড়াই ভারতের লোকসভায় পাস হয়ে গেল তিন তালাক বিল। এর মাধ্যমে দেশটিতে তাৎক্ষণিক তিন তালাক এখন নিষিদ্ধ, সেইসাথে ফৌজদারি ও অজামিনযোগ্য অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত হল। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ বিলটি উত্থাপন করার সময়, একে ভারতের ঐতিহাসিক দিন হিসেবে অভিহিত করেন৷ তবে বিরোধী দলগুলোর অনেক সদস্য এদিন বিলের বিরোধিতা করেন।

ভারতে তালাকের প্রবণতা এমন চরম পর্যায়ে চলে গেছে যে, মুসলিম পুরুষরা চিঠি লিখে, মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে এমনকি ফেসবুকের মাধ্যমে স্ত্রীদেরকে তালাক দেয়া শুরু করেছে। যার ফলে মুসলিম সমাজে সৃষ্ট বিশৃংখলা রুখতে এ আইন করল সরকার।

তাৎক্ষণিক তিন তালাককে অসাংবিধানিক হিসেবে উল্লেখ করে লোকসভায় রবি শংকর প্রসাদ বলেন, এ আইন সমাজে সমতা বিধান নিশ্চিত করবে। সবার জন্য এ আইন, কোন ধর্ম বা জাতির জন্য নয়। নারীরাও বিচার ও সম্মান পাওয়ার অধিকারী।

এর আগে আগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্ট তাৎক্ষণিক তিন তালাককে অসাংবিধানিক হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল লোকসভায় এ বিলটি উত্থাপিত হয়। এখন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তিন তালাকের মাধ্যমে কোন মুসলিম নারীকে ডিভোর্স দেয়া যাবে না।

এখন থেকে কোন মুসলিম পুরুষ এ আইন লঙ্ঘন করলে তার জন্য তিন বছরের জেল ও জরিমানা করতে পারবে আদালত। তবে জম্মু-কাশ্মীর ছাড়া ভারতের যে কোন স্থানে এ আইন কার্যকরী হবে।

বিলটিতে ডিভোর্সের পর নারীদের ভরণপোষণের নিশ্চয়তা দেয়া সেইসাথে শিশুদের অভিভাবকত্ব নারীদের, এ বিধান রাখা হয়েছে।

দেশটির অনেক ধর্মীয় সংগঠন বিরোধিতা করলেও সাধারণ মুসলিম নারীরা বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন তারা। আগ্রার এক মুসলিম নারী মোদি সরকারের প্রশংসা করে বলেন, এর আগে কেউ আমাদের কথা ভাবেনি। এবার পুরুষরা আমাদের কষ্ট বুঝতে পারবে। বিয়ে করার আগে অন্তত দুইবার চিন্তা করে। আগামি প্রজন্ম এ বিলের উপকারিতা বুঝতে পারবে এবং লাভবান হবে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, কলকাতা২৪, আনাদলু।