ভারতে ফণীর আতঙ্কের মাঝেই ভূমিকম্পের আঘাত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল শক্তি সঞ্চয়কারী ঘূর্ণিঝড় ফণীর আতঙ্ক এখন চারদিকে। শুক্রবার সকালের দিকে ভারতের ওড়িশা প্রদেশে আঘাত হানে এই ঝড়। ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর নারকীয় তাণ্ডবে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে যখন ফণীর আগ্রাসী ছোবলের আতঙ্ক তুঙ্গে, ঠিক তার আগে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠেছে হিমাচল প্রদেশ।

ভারতীয় একটি দৈনিক বলছে, আতঙ্কে বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছিলেন ওড়িশার লাখ লাখ মানুষ। তখনও ফণী ওড়িশায় আছড়ে পড়েনি। বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ফণী। আর ঠিক তখনই নিশ্চিন্ত নিদ্রা থেকে চমকে উঠে পড়েন ভারতের অন্য প্রান্তের মানুষজন।

হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলা-সহ আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ভোর ৪টা ৩২ মিনিট। ওই সময় কম্পনে অনেকেই বাড়ি-ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপসংস্থা ইউএসজিএস বলছে, হিমাচলে শুক্রবার ভোরে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ২। শুক্রবারের এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মান্ডি অঞ্চল। তবে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।

এর আগে, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ওড়িশার পুরীতে আছড়ে পড়ে অতি-প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ফণী। ওড়িশায় ফণীর নারকীয় তাণ্ডবে বাড়ি-ঘর ধসে পড়ার পাশাপাশি রাস্তায় উপড়ে পড়েছে শত শত গাছ। ওড়িশার অন্তত চারটি জেলা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।

জিনিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে দুপুরের পর থেকে তীব্র বাতাস ও বৃষ্টি বইছে। এর মাঝে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরে বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ভেঙে পড়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির নন্দকুমারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহাম্মদ নগর গ্রামে কয়েকটি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। সকালের দিকে ওড়িশার স্থলভাগে ফণী আছড়ে পড়ার কিছুক্ষণ পর রায়দিঘিতে শুরু হয় ঝড়।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফনি ভারতের ওড়িশা উপকূল পুরীর নিকট দিয়ে অতিক্রমরত। এটি বর্তমানে ওড়িশা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে অবস্থান করছে।