ভারতে ২১ খাদ্যপণ্য রফতানির সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ

ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্কের কারণে ভারতে বাংলাদেশ থেকে ২১টি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রফতানির সুযোগ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। ‘কৃষি, হর্টিকালচার ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্পখাতের ওপর ব্যবসায়িক সম্মেলন’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স।

হর্ষবর্ধন বলেন, ভারত সাধারণত আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি না থাকলে খাদ্যপণ্য আমদানি করে না। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সুসম্পর্ক থাকার কারণে বাংলাদেশ থেকে ২১টি খাদ্যপণ্য আমদানির সুযোগ দেয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাসকিন আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদসহ দুই দেশের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশে শিল্পায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০টি ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। ভারতের উদ্যোক্তারা চাইলে এর একটি তাদের জন্যও বরাদ্দ দেয়া হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে বিরাজমান স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতীয় শিল্প উদ্যোক্তারা নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারেন। ফলে বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ বাড়বে। পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগকৃত শিল্প কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পুনঃরপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। এতে করে দু’দেশের উদ্যোক্তা ও জনগণ লাভবান হবে। এটি আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি কমাতেও ইতিবাচক অবদান রাখবে। পাশাপাশি রফতানি বৈচিত্র্যকরণের নতুন সুযোগ তৈরি করবে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, আমি আশ্বস্ত করতে চাই, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পাশে থাকা পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে আপনারা বাংলাদেশে যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসলে আমরা সম্ভব সব ধরনের সহায়তা দেব। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে যৌথ বিনিয়োগ করতে পারেন। এক্ষেত্রেও আমাদের সরকার উদার নীতি গ্রহণ করবে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিশাল সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে আমির হোসেন আমু বলেন, এ অঞ্চলে বাংলাদেশি ইট, সিমেন্ট, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং খাদ্যপণ্য, কৃষিভিত্তিক পণ্য, মাছ এবং মাছজাত পণ্য, মেলামাইন, সিরামিক, প্রসাধনী ও কসমেটিক্স এবং সিআই শিট, হালকা প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়াও সবজি, মশলা এবং ফল-মূল ইত্যাদি রফতানির অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে এগুলো ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা চাইলে প্রক্রিতাজাত খাদ্যপণ্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন।

অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশের দু’দিন ব্যাপী ক্রেতা-বিক্রেতা মিলন মেলার উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী। আজ থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে আগামীকাল পর্যন্ত। ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে মেলা।