‘ভারত আমাদের ভাই, আর চীন চাচাতো ভাই’

ভারত হচ্ছে আমাদের ভাই, আর চীন হচ্ছে দীর্ঘদিন পর খুঁজে পাওয়া চাচাতো ভাই—চীনে নিযুক্ত মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ফয়সাল এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, নয়াদিল্লির উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও চীনা প্রকল্পগুলো নিয়ে এগিয়ে যাবে তাঁর দেশ।

মালদ্বীপের চলমান রাজনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের জারি করা ৪৫ দিনের জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মোহাম্মদ ফয়সাল এ কথা বলেন।

হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘চীন হচ্ছে দীর্ঘদিনের হারিয়ে যাওয়া চাচাতো ভাইয়ের মতো। যাকে আমরা খুঁজে পেয়েছি। এই হারিয়ে যাওয়া ভাই আমাদের সহযোগিতা করতে আগ্রহী।’ তিনি বলেন, ‘ভারত হচ্ছে আমাদের ভাই। আমরা একটি পরিবার। আমরা ঝগড়া করতে পারি এবং যুক্তি-তর্ক করতে পারি। কিন্তু শেষে আমরা একসঙ্গে বসব এবং সমস্যা সমাধান করব।’

এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মালদ্বীপের অর্থায়নে ভারতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা প্রয়োজনীয় অর্থ পাইনি।’ মালদ্বীপ আরও চীনা বিনিয়োগ নেবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চীন ও ভারতের মধ্যে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকবে মালদ্বীপ।

শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারত মহাসাগরে একুশ শতকের সামুদ্রিক সিল্ক রোড পরিকল্পনায় মালদ্বীপে চীন একটি প্রধান অংশগ্রহণকারী দেশ। মালদ্বীপে প্রবালপ্রাচীর দিয়ে ঘেরা ২৬টি ক্রান্তীয় দ্বীপ ও এক হাজার ছোট দ্বীপে রয়েছে চীনের বড় ধরনের বিনিয়োগ। চীন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের প্রতিরক্ষাকে আরও সুরক্ষা দিচ্ছে। ফলে চলমান রাজনৈতিক সংকটে আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও তিনি (ইয়েমেন) ক্ষমতায় থাকতে সক্ষম হচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট সন্ত্রাসবাদে জড়িত অভিযোগে কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নয়জন নেতাকে মুক্তির আদেশ দেন। এঁদের মধ্যে বিদেশে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদও রয়েছেন। এ ছাড়া বহিষ্কার করা ইয়ামিনের দলের ১২ জন আইনপ্রণেতাকে স্বপদে ফিরিয়ে আনার আদেশও দেন আদালত। এই ১২ জন আইনপ্রণেতার ওপর থেকে বহিষ্কারাদেশ ফিরিয়ে নেওয়া হলে ৮৫ সদস্যের আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে সরকারি দল। কিন্তু ইয়ামিনের সরকার আদালতের এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করলে শুরু হয় রাজনৈতিক সংকট।