ভারত সীমান্তে পাকিস্তানের ফের হামলা, তুমুল গোলাবর্ষণ

কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি) বুধবার ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ভারতের প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনবার সীমান্ত চুক্তি লংঘন করলো পাকিস্তান।

ভারতের সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাকিস্তানের সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) অতিক্রম করে জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী শহর রাজৌরিতে হামলা চালায়।রাজৌরির নওশেরা ও সুন্দরবানী এলাকায় ভারী গোলা ও বোমা বর্ষণ চালায় পাকিস্তান সেনারা।
এর পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনারা।এসময় দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়।স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।সীমান্তের ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যতগুলো স্কুল আছে তার সবগুলো তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেয়া হয়।

ভারতীয় বাহিনীর দাবি, পাকিস্তানের সেনারাই আগে গুলি চালিয়েছে। আর তারা এর জবাবে পাল্টা গুলি ছুঁড়েছে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করল বলে দাবি ভারতের সেনাদের।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দর আনন্দের বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওশেরা ও সুন্দেরবানী সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাক সেনারা গোলাবারুদ নিক্ষেপ এবং গুলি (স্মল আর্ম ব্যবহার করে) চালায়। ভারতীয় বাহিনী এর কড়া জবাব দিচ্ছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের দাবি পাকিস্তান তাদের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। একদিনের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো অস্ত্রবিরতি লংঘন করেছে।

তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই রাজৌরি ও পুঁচ জেলার নিয়ন্ত্রণরেখায় থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে সব স্কুল এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, মাত্র ১০ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও সীমান্তরেখা অতিক্রম করে করল পাকিস্তান সেনারা। এর আগে বুধবার ভোর সাড়ে ৪টায় কাশ্মীরের রাজৌরি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর হামলা করে তারা। এতে ভারতীয় এক সেনা আহত হন বলে দাবি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধাসামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলায় অন্তত ৪৪ সেনা নিহত হন। এই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ। ভারত এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে বলে দাবি করে আসছে।

এ হামলার জেরে গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। হামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জঙ্গি নিহত হন বলে দাবি করেছে দেশটি।

এখানেই থেমে নেই, গত বুধবার পাকিস্তান সীমান্তে ভারতীয় দুই যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করেন পাকিস্তানি সেনারা। জবাবে ভারত পাকিস্তানের দুটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করে।

ঘটনাপ্রবাহে পাকিস্তান বাহিনীর হাতে বন্দি হন দেশটির এক পাইলট। আর পাকিস্তান হারায় একটি যুদ্ধবিমান।

পরে নানা নাটকীয়তার পর গত শুক্রবার তাকে মুক্তি দেয় ইমরান খানের পাকিস্তান।