ঘন দৃষ্টিতে জেনেছি পাখিদের মন

ভালোবাসা কেন সব কিছুর চেয়ে বড় || নাজমীন মর্তুজা

অগাধ শূন্যতার বেস্টনের মধ্যে আমরা কারো-না-কারো কাছে কিছু চাই; বলা যায় ‘বিশেষকিছু’ চাই। এই ‘চাই’ কথাটাকে ত্রিমাত্রিক করে তুলবার জন্য, দুটো মনের মধ্যে প্রতিমুহূর্তের যে যোগ—তারই নাম ভালোবাসা। আমি আর তুমি তারপর ‘আমরা’—এই যে সম্পর্ক, এ নিয়ে আমাদের ‘আছি’র মধ্যে দায়িত্ব-কর্তব্যবোধ ক্রিয়া করে। আর এই ‘আছি’ কথাটা যদি হয় ধারণাতীত শূন্যতায় ভাসমান প্রবাহিত নৌকার মত, তবে তাকে বয়ে নেবার জন্য ভালোবাসাই যথেষ্ট।

ভালোবাসা নিয়ে তেইয়ার দ্যা শার্দ্যাঁর মতো মানুষেরা ভাবতেন যে, বিশ্বশীর্ষে আছে ভালোবাসার কোনো পরম উৎস, কোনো পরম লক্ষ্য। তারা রহস্যময় সেই কেন্দ্রের নাম দিয়েছিলেন ‘ওমেগা’। যেন সেই উচ্চতম স্তর থেকে বিচ্ছুরিত হয়ে পড়ে সব। কিন্তু আমি নাদান কোনো শীর্ষ কেন্দ্রকে দেখতে পাই না। তবে এটা দেখতে পাই যে, প্রাণনার সমস্ত মহলেই জীব বা উদ্ভিদ একের দিকে অন্যের বিসর্পিত অভিমুখিতা। আর এই পারস্পরিক অভিমুখি টানের নামই ভালোবাসা। যেমন আমি সবসময় ভাবি প্রকৃতির সাথে যোগ, আর এই যোগের নাম ভালোবাসা।

হয়তো কোথাও শার্দ্যাঁর ‘ওমেগা’ নেই কিন্তু বিশ্বের প্রতিটি বিন্দু যেন স্বতন্ত্র, একেকটি মন যেন স্বতন্ত্র ‘ওমেগা’ হয়ে ছড়িয়ে আছে। নয়তো আমি কেন এই পাখিদের জন্য এত ভালোবাসা বহন করি! ওদের জন্য ভাত রাঁধি কিংবা ভাল খাবার যোগাড় করে রাখি! আমি তাদেরকে যা দিই, তা তো আদতে নিজেকেই দিই। পাখি আর আমার মধ্যে যে পরম একাত্মতা, এই যে আত্মার টান, এসবই তো আমায় বিশ্বাত্মার প্রেষণা যোগায়!

ঐ যে বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘জীবে প্রেম করিছে যে জন, সে জন সেবিছে ঈশ্বর।’