‘ভালো ঋণখেলাপিদের’ ঋণমুক্তির সুযোগ দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়

কিছু ঋণগ্রহিতা বা ঋণখেলাপি থাকেন, যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেন ফেরত দেয়ার জন্য নয়। আবার কিছু ঋণখেলাপি থাকেন, যারা ব্যবসা করতে গিয়ে লোকসান দিয়ে ঋণখেলাপি হন। যারা ঋণ নেন ফেরত দেয়ার জন্য নয়, তারা বাদে বাকিদের ঋণমুক্তির সুযোগ দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থসচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান ও বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী মে মাসের ১ তারিখ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়ন হতে চলেছে। সব ধরনের ঋণের ওপর সুদহার কমিয়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র ভালো ঋণ গ্রহীতারা এ সুবিধা পাবেন। অসাধুরা পাবেন না।

তিনি বলেন, তাদের আমরা ১২ বছর সময় দিচ্ছি। যার যা ঋণ আছে, ছোট বা বড় সব ঋণগ্রহিতা, তারা ২ শতাংশ পরিশোধ করবে। যে ঋণটা থাকবে, সেটার ওপর সবসময় তারা ৭ শতাংশ চক্রাবৃদ্ধি নয়, সরল সুদ দেবে।

‘ঋণগ্রহিতাদের মধ্যে কেউ ভালো ঋণগ্রহিতা এবং কেউ অসাধু ঋণগ্রহিতা। যারা ভালো ঋণগ্রহিতা তাদের সুযোগ দেব আর অসাধু ঋণগ্রহিতাদের এই সুবিধা দেয়া হবে না। আমরা বহু আগে থেকেই বলে আসছিলাম, আমাদের সুদের হার সিঙ্গেল (এক) ডিজিটের হবে, এটা এতদিন আমরা করতে পারিনি। এখন আমরা সিঙ্গেল ডিজিট নিজেরাই করে দিচ্ছি’ যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।

অসাধু ঋণগ্রহিতা কীভাবে নির্ধারণ হবে- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যারা খারাপ ঋণগ্রহিতা, তাদের রেকর্ডই তো আছে। টাকা নিলাম, ১০ বছরে এক টাকাও দিলাম না, তাহলে আমি ভালো? বা টাকা নিলাম দুই বছরেও এক টাকা দিলাম না, আমি কী ভালো? কিংবা ১০ বার আমি রফতানি করলাম, কিন্তু একবারও আমি ব্যাংকে টাকা ঢুকালাম না, তাহলে কী আমি ভালো? কারা ভালো আর কারা অসাধু ঋণগ্রহিতা, সেটা বের করার জন্য আমরা একটা স্পেশাল অডিটের ব্যবস্থা করেছি। এটা কাজ শুরু হবে। সেখান থেকেও আমরা জানতে পারব, কারা ভালো আর কারা খারাপ।’

তিনি বলেন, কখনও তারা যদি কোনো একসময় মনে করে, সুদ করে চলে যাবে, সেই ব্যবস্থাও আমরা রেখে দিয়েছি। যদি মনে করি, এখন তাদের লেনদেন ভালো, স্ট্যাটিক ভালো- সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা তাদের নতুন করে একই ব্যাংক থেকে ঋণ দেব। তাদের অ্যাক্সিট দেয়ার জন্য আমরা এই ব্যবস্থা করতেছি।’

নতুন ঋণগ্রহীতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন থেকে যারা আসবে, তাদের জন্যও আমরা সুদের হার কমিয়ে দেব। একটা মার্কেট বেসড (বাজারভিত্তিক) সুদ হবে। সেটার ভিত্তিতে কেউ-ই লস করবে না।‘

যারা আগে ১০, ১২ বা দুই ডিজিট সুদে ঋণ নিয়েছে, সেটা তাদের দিতে হবে না। ৭ শতাংশ হারে সুদ দিলেই হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।