ভালো করে দেখুন তো এই নায়িকাকে, চিনতে পারছেন কি?

পার্টিতে এক কিশোরীর দিকে তাকিয়ে চোখ আটকে গিয়েছিল হেমা মালিনীর মা জয়লক্ষ্মীর| মনে হয়েছিল ওই কিশোরীকে দেখতে একদম তার মেয়ের মতো| এ যেন অবিকল হেমার কিশোরী বেলা|

জয়লক্ষ্মী নিয়ে গেলেন কিশোরীকে প্রোডিউসারদের কাছে| ছবির অফার পেতে দেরি হল না সেই মেয়ের| কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি প্রথমসারির নায়িকা বিন্দিয়া গোস্বামী| কপালের বিন্দির মতো তার ব্যক্তিগত জীবনও কম চিত্রিত, চমকপ্রদ নয়|

জন্ম ভারতের রাজস্থানের ভরতপুরে, ১৯৬১ সালের ৮ অগাস্ট| তার বাবা বেণুগোপাল গোস্বামী ছিলেন দক্ষিণ ভারতীয় বল্লভ সম্প্রদায়ের| পেশা ছিল পৌরহিত্য| মা ডলি ক্যাথলিক খ্রিস্টান| বেণুগোপাল মোট সাত বার বিয়ে করেছিলেন|

বিন্দিয়ার প্রথম ছবি জীবনজ্যোতি| মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৬ সালে| নায়ক ছিলেন বিজয় অরোরা| তার কেরিয়ার ততদিনে অস্তগামী| এই ছবির পরে বলা যায় বিজয়ের অভিনয় পর্ব কার্যত শেষই হয়ে যায়| জীবনজ্যোতিও ফ্লপ করে| তবে পরিচিতি পান বিন্দিয়া|

১৯৭৭ সালে বাসু চ্যাটার্জির পরিচালনায় বিন্দিয়া অভিনয় করেন খাট্টা মিঠায়| দু বছর পরে প্রেম বিবাহ ছবিতে| বক্স অফিসে সাফল্যের পাশাপাশি নজর কাড়ে বিন্দিয়ার কাজ|

তার কেরিয়ারে সবথেকে বড় হিট ১৯৭৯ সালে হৃষিকেশ মুখার্জির পরিচালনায় কমেডি ‘ গোলমাল’| এই ছবির দুর্দান্ত সাফল্য তাকে সুযোগ এনে দেয় বড় বাজেটের ছবি ‘শান’-এ শশী কাপুরের বিপরীতে অভিনয়ের| তবে শান কিন্তু খুব বেশি সাফল্য পায়নি|

অন্যদিকে বিনোদ মেহরার বিপরীতে বিন্দিয়ার বেশ কিছু ছবি পরপর সাফল্য পেয়েছিল| তবে এটা তার কেরিয়ারে কতটা সাহায্য করেছিল, তা তর্কসাপেক্ষ| অভিনয় করতে করতেই ব্যক্তিগত জীবনেও বিনোদ মেহরাকে বিয়ে করে বসলেন বিন্দিয়া|

কেরিয়ারের তুঙ্গে থাকা বিন্দিয়া তখন ১৮ বছরের সদ্য তরুণী| বিনোদের বয়স ৩১, প্রায় দ্বিগুণ| সবথেকে বড় কথা, তিনি তখন বিবাহিত| যদিও সম্বন্ধ করে বিয়ে করা প্রথম স্ত্রী মীনার সঙ্গে তার দাম্পত্য কোনওদিনই সুখের ছিল না|

প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে বিচ্ছেদ না করেই বিন্দিয়াকে বিয়ে করেছিলেন বিনোদ| এই বিয়েও স্থায়ী হয়েছিল মাত্র চার বছর| বিনোদকে ডিভোর্স করার দু বছরের মধ্যে ১৯৮৫ সালে বিন্দিয়া বিয়ে করে নেন পরিচালক জে পি দত্তাকে| তবে প্রথম স্বামী সম্বন্ধে কোনওদিন বিন্দিয়ার মুখে কোনও কটু কথা শোনা যায়নি|

জে পি দত্তাকে বিয়ের পরে অভিনয় পুরোপুরি ছেড়ে দেন বিন্দিয়া| বরং স্বামীর বেশ কিছু ছবিতে তিনি কস্টিউম ডিজাইনিং-এর কাজ করেছিলেন| বর্ডার, এলওসি কার্গিল, রেফিউজি এবং উমরাও জান-এর মতো ছবিতে তিনিই সাজিয়েছিলেন নায়ক নায়িকাদের|

পাশের বাড়ির মিষ্টি মেয়েসুলভ সেই নায়িকা বিন্দিয়া গোস্বামী দত্তা আজ মধ্য পঞ্চাশের ভরপুর গিন্নি| দুই মেয়ে, নিধি এবং সিদ্ধির মা| বড় মেয়ে নিধি মায়ের মতোই নায়িকা হতে চান|