বিশ্বজিৎ হত্যা: ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে ময়নাতদন্তের কোনও মিল নেই

বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় দায়ের করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সঠিক ছিল না উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, সেখানে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে ময়নাতদন্তের কোনও মিল নেই। আদালত এই মামলায় টিভি ফুটেজ, স্টিল ফটোগ্রাফ পেপার কাটিং এর মতো জিনিসগুলোকে দালিলিক প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করেছে।

বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষণাকালে আদালত বলেন, নিঃসন্দেহে অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে। টিভি ফুটেজ, স্টিল ফটো, পেপার কাটিং ও সাক্ষ্য প্রমাণগুলো প্রত্যক্ষ সাক্ষীর জবানবন্দি থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যে রিকশাওয়ালা বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়েছিলেন তার কথা উল্লেখ করে আদালত বলেন, হত্যার মুহুর্তে বিশ্বজিৎ ছিল ‘ডিফেন্সলেস আনপ্রোটেকটেড’ এবং তাকে দিনের আলোতে খুন করা হয়।

হত্যাদৃশ্যের ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের মিল না থাকায় সুরতহালের সঙ্গে সূত্রাপুর থানার সংশ্লিষ্ট এসআই জাহিদুর রহমানের দায়িত্বে অবহেলা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ময়নাতদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত ডাক্তারের দায়িত্বে অবহেলা ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত এবিষয়ে ফলোআপ করতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

রায়ের পর এবিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্র রাজনীতির ব্যাপারে কোনও দলের কথা উল্লেখ না করে আদালত বলেছেন, ‘ছাত্ররা যাতে কোনও দলের দ্বারা ব্যবহৃত না হয়। তাদের কর্মকাণ্ড আরও পরিশীলিত হওয়া উচিত।’

আদালত এই মামলায় দেখতে পান যে, পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন এবং ডাক্তার যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন করেছেন তার সঙ্গে ঘটনার সময়ে করা ভিডিও ফুটেজের মিল নেই। আদালত ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন সাক্ষ্য দ্বারা বিশ্বজিতের শরীরে একাধিক আঘাত এর কথা শুনলেও মামলার বিচারিক নথি হিসেবে দায়ের করা সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এত আঘাতের উল্লেখ নেই। ফলে তাদের দায়িত্বে কোনও অবহেলা হয়েছে কিনা তদন্ত করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়াদের মধ্যে দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। মোট মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আটজনের মধ্যে দুইজনের ফাঁসি বহাল, দুইজন খালাস ও চারজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রবিবার (৬ আগস্ট) বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া ১৫ জনের মধ্যে ১১ জন পলাতক।