ভিন গ্রহের ‘মানুষ’ দেখতে ‘জেলিফিশ’ এর মতো!

ভিন গ্রহের ‘মানুষ’ দেখতে কেমন হবে? তা জানতে রীতিমত কৌতূহলের শেষ নেই বিশ্বের মানুষদের। অবশ্য সায়েন্স ফিকশন সিনেমায় আমরা দেখতে পেয়েছি ভিনগ্রহের ‘মানুষ’ দেখতে আকৃতিতে ছোট এবং সবুজ।

গ্রহান্তরে আগন্তুকদের এ ধরনের চেহারা হবে কিনা তা নিয়ে অনেকের সংশয় থাকাই স্বাভাবিক। বিশ্বের বহির্জীবনের চেহারা কি হবে তা নিয়েও নিশ্চিত কিছু বলার উপায় নেই। তবে, এবার ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ড. ম্যাগি অ্যাডরিন-পোকক শুনিয়েছেন একেবারে ভিন্ন কথা। তিনি বলছেন, গ্রহান্তরের জীব দেখতে মোটেও বিজ্ঞান-কল্প সিনেমার সবুজ ছোট্ট ‘মানুষের’ মতো হবে না; বরং তারা হবে দেখতে বিশাল ‘জেলিফিশের’ মত এবং নিচের দিকটা হবে কমলা রঙের।

ব্রিটিশ এ বিজ্ঞানী উপগ্রহ বিশেষজ্ঞ এবং যুক্তরাজ্য সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, জেলিফিশের মতো দেখতে হলেও এরা সাগরে বসবাস করবে না বরং বৃহস্পতির মতো কোনও গ্রহের স্থলভাগে থাকবে এবং ভেসে বেড়াবে।

আমাদের চারপাশে জীবনের যে ব্যাপক সমারোহ দেখতে পাই তার সবই কার্বনভিত্তিক। কিন্তু, গ্রহান্তরের এসব প্রাণী মোটেও কার্বনভিত্তিক হবে না। বরং এগুলি হবে ‘সিলিকন’ ভিত্তিক এবং তারা ‘ত্বক’ বা ‘চামড়া’র মধ্যদিয়ে আলো গ্রহণ করবে এবং বিশাল মুখ-গহ্বর দিয়ে তারা আবহমণ্ডল থেকে রাসায়নিক উপাদান টেনে নেবে।

দেহের তলদেশ কমলা বর্ণের হওয়ায় রক্তিম আবহ-মণ্ডলের শিকারি প্রাণীদের ফাঁকি দিতে পারবে। তাদের দেহ হবে পেঁয়াজ আকৃতির এবং অনেকটা গরম বাষ্পপূর্ণ বেলুনের মতো কাজ করবে, প্রয়োজনে তা গ্যাস টেনে নেবে বা ছেড়ে দেবে। ফলে সহজেই উঁচুতে উঠতে বা নিচে নামতে পারবে।
তবে এ ধরনের বহির্জীবনের সঙ্গে মানুষের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করেন এ বিজ্ঞানী। আমাদের নক্ষত্রপুঞ্জ মিল্কিওয়েতেই রয়েছে লক্ষ কোটি গ্রহ। এর মধ্যে হাতে গোণা কয়েকটিতেই জীবন টিকে থাকতে পারবে। তাই এসব গ্রহের জীবন সম্পর্কে জানা হয়তো কোনদিনই সম্ভব হবে না মানুষের পক্ষে।

অবশ্য, গ্রহান্তরের জীবন বা মানুষ নিয়ে বিশ্ববাসীর কৌতূহল কখনই থেমে থাকবে না। নিত্য নতুন গবেষণা চলছে এবং চলবে। কেউ কেউ মনে করেন, অনেক উন্নত জীবন-ব্যবস্থা বা সভ্যতা হয়তো গড়ে তোলা হয়েছে গ্রহান্তরের কোনও এক প্রান্তরে। সেসব গ্রহের অধিবাসীরা নিজেরাই একদিন এসে যোগাযোগ করবে পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে। কিন্তু প্রশ্ন হল- আজই যদি দূর গ্রহের পথ পাড়ি দিয়ে আপনার জানালায় টোকা দেয় কোনও ‘গ্রহ-মানুষ’ আপনি কি তাকে চিনতে পারবেন!