ভূয়া ঠিকানায় চাকুরি নিয়ে বহাল তবিয়তে ৪ বছর : অবশেষে বিভাগীয় তদন্ত

শামীম রেজা, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে ভূয়া ঠিকানা দিয়ে স্বামী-স্ত্রী চাকুরি নিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন ৪ বছর, সরকারী বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করে চলেছেন অবলীলায়। অবশেষে টনক নড়েছে কর্তা বাবুদের। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট নির্দৃষ্ঠ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করতে ৩ ডিসেম্বর রবিবার বিভাগীয় তদন্ত টিমের ১ সদস্যের প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা এসে এ অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। নড়াইল জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো.শামসুল আলম বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে রবিবার সকাল ১০ টার সময় চুয়াডাঙ্গা অফিসে এ তদন্ত কার্য সম্পন্ন করেন। এ সময় তিনি অভিযোগকারী একই বিভাগের জনৈক পরিদর্শক ও অভিযুক্ত আয়া কোহিনুরের স্বাক্ষ গ্রহন করেন।

এ ব্যাপারে গোপনে জানতে পেরে চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা তাৎক্ষনিক ছুটে যান চুয়াডাঙ্গা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অফিসে। তদন্তকারী কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতির বিষয়ে বিব্রত বোধ করলে সাংবাদিকরা ফিরে আসেন, তবে তিনি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত কার্য সম্পন্ন করবেন বলে সাংবাদিকদেরকে নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা সুত্র। অবশ্য তথ্য গোপন করে চাকুরি নেয়া কোহিনুর আদেন পত্রে যে ভূয়া স্থায়ী ঠিকানার কথা উল্লেখ করেছিলেন সেই চুয়াডাঙ্গার বেলগাছী মহল্লার অনেক নারী-পুরুষ এসেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তার সাথে দেখা করে অভিযুক্ত কোহিনুরের দেয়া মিথ্যা তথ্যের ব্যাপারে সঠিক তথ্যটি জানানোর জন্য, তিনি তাদের সাথেও দেখা করেননি।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অফিসে ড্রাইভার পদে চাকুরিরত নেছার উদ্দীন তার বড় বউ কোহিনুর খাতুনের বয়স কমিয়ে ও স্থায়ী ঠিকানা ভূল দেখিয়ে এ বিভাগের দামুড়হদা উপজেরার নতিপোতা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে আয়া পদে চাকুরি পাইয়ে দেন গত ০৯ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে। এ সময় মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়র পরিষদ থেকে ১৮-০৪-২০১৩ তারিখে ইস্যুকৃত কোহিনুর খাতুনের জন্ম সনদে (নং ১৯৮৫৫৭১৪৭২১০৪৫৮৭৯) তার জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ১৮-০১-১৯৮৫। আর স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে গ্রাম আযান, পোঃ ইসলামনগর, উপজেলা গাংনী, জেলা মেহেরপুর। যদিও বয়সের ক্ষেত্রে বাস্তবতার সাথে কোন মিল নেই ,তার বয়স অনেক কমানো হয়েছে। তার চাকুরির আবেদন পত্রে স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে বেলগাছী ঈদগা পাড়া, চুয়াডাঙ্গা।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মনি এ ব্যাপারে লিখিত প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেছেন, যাতে তিনি উল্লেখ করেছেন চুয়াডাঙ্গার বেলগাছী ঈদগা পাড়ায় কোহিনুর খাতুন নামে কোন বাসিন্দা বাস করেননা। এছাড়া ঐ এলাকার কয়েক’শ মানুষ তাদের নাম, স্বাক্ষর ও মোবাইল নং সম্বলিত প্রত্যয়ন পত্রে একই ভাবে কোহিনুরের দেয়া স্থায়ী ঠিকানা ভূয়া বলে উল্লেখ করেছেন। কোহিনুরের নিয়োগ পত্রের ২য় পাতায় স্পষ্ঠ উল্লেখ রয়েছে স্থায়ী ঠিকানা সম্পর্কে ভবিষ্যতে কোন গড়মিল প্রমানিত হলে এ নিয়োগ বাতিল বলে গন্য হবে। এব্যাপারে স্থানীয় পত্র পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং কোহিনুরের একজন কলিগ উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছিলেন।