ভোগান্তি সত্ত্বেও ছুটছে মানুষ নাড়ির টানে

পথে পথে ভোগান্তি। ঝক্কি-ঝামেলা। তারপরও ছুটছে মানুষ নাড়ির টানে, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপনে। বাস, ট্রেন, লঞ্চ- যে, যেভাবে পারছেন পরিবার নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন বাড়ির পানে। ফলে শুক্রবার ভোর থেকে রাজধানীর বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেল স্টেশনে ঘুরমুখো মানুষের স্রোত নেমেছে।অবশ্য এবারের ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। অনেকেই শেষ কর্মদিবসে হাজিরা দিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাড়ির উদ্দেশে। তবে শুক্রবার ভোর থেকে রাজধানীর তিনটি আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল ও কমলাপুর রেল স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

যানজট তেমন না থাকলেও ঢাকা থেকে বের হয়ে যাওয়া গাড়ির চাপ পড়েছে তিনটি মহাসড়কে। এতে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে।
উত্তরের উদ্দেশে গাবতলী আর মহাখালী টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ অঞ্চলের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে যানবাহন।

ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় ঘরমুখী যাত্রীদের যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নবীনগর পর্যন্ত যানবাহন চলছে ধীর গতিতে।

সাভার ট্রাফিকের পরিদর্শক আবুল হোসেন জানান, সকাল ছয়টা থেকে আটটা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বিশমাইল, সাভার সেনানিবাস এলাকায় তিনটি যানবাহন বিকল হয়। এ কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিকল্প সড়ক আবদুল্লাহপুর বাইপাইলে যানজট নেই।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রার মোড়ে সকালে যানজট ছিল না। তবে টাঙ্গাইলের খাড়াজোড়া থেকে বুটগড় এলাকা দিয়ে যানবাহন ধীর গতিতে চলছে। চন্দ্রা ও আশপাশের বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ভোর থেকে শত শত যাত্রী যানবাহনের অপেক্ষায় রয়েছেন। বাসের ছাদেও তিল ধারণের জায়গা নেই।

কোনাবাড়ী হাইওয়ে পুলিশের ওসি হোসেন সরকার জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কোনাবাড়ি, চন্দ্রার পর কিছু এলাকায় ধীর গতিতে যান চলছে।

গাড়ির বেশি চাপের কারণে এমনটা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগড়া পর্যন্ত যানবাহনের ধীর গতি রয়েছে। তবে কোথাও দীর্ঘ যানজট নেই।

গাজীপুরের নাওজোর হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল হাই জানান, মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতুতে যানজট দেখা গেলেও শুক্রবার সকালে তেমন যানজট নেই। সায়েদাবাদ থেকে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও সিলেট অঞ্চলগামী বাসগুলো নিয়মিতই ছেড়ে যাচ্ছে।

মাওয়া মহাসড়কেও তেমন যানজট নেই বলে সায়েদাবাদ থেকে বরিশাল-খুলনা অঞ্চলগামী বাসগুলোর কাউন্টারকর্মীরা জানিয়েছেন।

এদিকে, মঙ্গলবার সময়সূচি এলোমেলো হয়ে গেলেও পরদিনই সামলে ওঠেছিল রেলওয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনগুলো মোটামুটি সময় ধরে ছাড়ছে।

এছাড়া সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় বাড়বে দুপুরের পর। দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চগুলো দুপুরের পর থেকে ঘাট ছাড়তে শুরু করবে।
এবার ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি ২৫ থেকে ২৭ জুন। তার আগে দুদিন শুক্র আর শনিবার থাকায় কার্যত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা।