মধ্যপ্রাচ্যের ভাড়াটে গুণ্ডা সৌদি আরব : কাতার

সৌদি জোটের আগ্রাসনের সর্বশেষ লক্ষ্য হয়েছে লেবানন; যা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তোলার ঝুঁকি তৈরি করেছে। কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি সৌদি আরবকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের ভাড়াটে গুণ্ডা’ হিসেবে মন্তব্য করে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

কাতারের এই উপ-প্রধানমন্ত্রী দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোকে শাসানো এবং চলমান কূটনৈতিক সঙ্কটে নতুন সংঘাত উসকে দেয়ার অভিযোগ করেছেন রিয়াদের বিরুদ্ধে।

রিয়াদে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির আকস্মিক পদত্যাগের ব্যাপারে কাতারের এই উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, রিয়াদে থাকাকালীন হারিরিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। লেবাননের রাজনীতিকদের দাবি, পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার আগে হারিরিকে গৃহবন্দি করে রেখেছিল সৌদি আরব।

লন্ডনে এক গোলটেবিল বৈঠকে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেনডেন্টকে আল-থানি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের ভঙ্গুর একটি দেশ লেবানন, প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে চাপ প্রয়োগ করে দেশটিতে শূন্যতা তৈরি করা হয়; যা প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর, এটি এক ধরনের বিকৃত নীতি।

‘একটি বড় দেশ ভাড়াটে গুণ্ডার মতো ছোট একটি দেশকে শাসাচ্ছে- এটি কাতারের ক্ষেত্রেও দেখেছি; আমরা এখন এর পুনরাবৃত্তি দেখছি লেবাননে।’

‘সৃষ্টিকর্তা ও মিত্রদের ধন্যবাদ; যারা ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করেছেন। যদি শুরুতেই এটি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হতো তাহলে আমরা এর ভীতিকর প্রভাব দেখতে পেতাম।’

মিসর এবং ফ্রান্সের হস্তক্ষেপে গত সপ্তাহে সৌদি আরব ত্যাগ করে দেশে ফেরেন সাদ হারিরি। পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট মিশেল আওনের সঙ্গে আলোচনার পর পদত্যাগ প্রত্যাহার করে নেন তিনি। লেবাননের এই প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে বাধ্য করা ও সৌদি আরবের নাগরিকত্ব রয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে রিয়াদ তা অস্বীকার করেছে।

কাতারের সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি জোটের গত জুনে শুরু হওয়া কূটনৈতিক ব্যাপক টানাপড়েনের মাঝে আল-থানি এসব মন্তব্য করলেন। কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতা চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

এই বিতর্কের জেরে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার, কূটনীতিকদের ফেরত, কাতারের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আল-জাজিরা বন্ধ, কাতারের একমাত্র স্থলসীমান্ত, আকাশ ও জলসীমা বন্ধ করা হয়েছে। কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধে আন্তর্জাতিক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

সূত্র : দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।