মধ্যরাতে তরুণীকে হেনস্তা, পুলিশের ‘টিম লিডার’ বরখাস্ত

রাজধানীর রামপুরা টিভি সেন্টার এলাকায় মধ্যরাতে তল্লাশির নামে এক তরুণীকে হেনস্তা করায় রামপুরা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইকবালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি সেদিন রাতে চেক পোস্টের টিম লিডার ছিলেন। এ ছাড়া মিরপুরের দাঙ্গা দমন বিভাগের (বর্তমান নাম পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট) পুলিশের ৪ সদস্যকে সনাক্ত করা হয়েছে।

পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় মোট পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

ডিএমপির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (খিলগাঁও জোন) নাদিয়া জুঁইকে এ ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জানতে চাইলে নাদিয়া জুঁই বলেন, ‘আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এর আগে সোমবার রাতে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক তরুণীকে হেনস্তা করেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তরুণীর সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই পুলিশের প্রশ্ন ও কর্মকাণ্ড নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।

এ বিষয়ে দিনভর কোনো কথা না বললেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৬ মিনিটে ডিএমপির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জানানো হয়, ‘পুলিশ চেকপোস্টে সিএনজি আরোহী এক নারীর সাথে পুলিশের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে ঢাকা মহানগর পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।’

ডিএমপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভিডিওটি যাচাই-বাছাই করে এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনারের অনুমতিক্রমে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম এক ফেসবুক পোস্টে জানান, ‘ভিডিও ধারণকারী পুলিশ সদস্যদের শনাক্ত করা গেছে। সম্মানিত কমিশনার মহোদয়ের অনুমতিক্রমে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আশা করি এবং অবশ্যই আপনারাও আশা করবেন যে, মামলার মাধ্যমেই সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে। আপনারা জানবেন যে, প্রত্যেকটা প্রোসেডিংয়ের নিয়মকানুন আছে, সেসব আমলে নিয়েই এগুতে হচ্ছে বলে সময় একটু লাগছে কিন্তু শাস্তি নিশ্চিত।’