মসজিদের পাশেই মন্দির, ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন!

মসজিদের পাশেই মন্দির। সেখানে আয়োজন হয়েছে দুর্গাপূজার। মসজিদের আজান শুরু হতেই মন্দিরের পূজা-অর্চনা বন্ধ। দলে দলে মুসল্লিরা মসজিদে ঢুকছেন। কিছুক্ষণ পর শুরু হবে জোহরের নামাজ। মন্দিরে ঢোল-তবলা ও পূজার সামগ্রী নিয়ে অপেক্ষা করছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ। নামাজ শেষ হলেই ফের শুরু হবে পূজা-অর্চনা। ঢাক-ঢোল তবলায় প্রকম্পিত হবে মন্দির প্রাঙ্গণ।

বুধবার দুপুর দেড়টায় লালমনিরহাট শহরের পুরান বাজারের একই স্থানে পাশাপাশি অবস্থিত মসজিদ-মন্দিরে গিয়ে দেখা যায় এই চিত্র। একই স্থানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মন্দিরে তাদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা পালন করছেন এবং পাশেই অবস্থিত মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আদায় করছেন নামাজ।

জানা গেছে, ১৮৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা হয় মন্দির। এর ৫ বছর পর ১৯০০ সালে প্রতিষ্ঠা হয় মসজিদ। প্রায় দেড়শ বছর ধরে হিন্দু-মুসলমান মিলে মিশে তাদের ধর্ম পালন করে আসছে।

কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ সনদ চন্দ্র জানান, প্রায় দেড়শ বছর পার হয়ে গেল এই মন্দির প্রতিষ্ঠার। বাপ-দাদার সময় থেকে আমরা এই স্থানে পূজা-অর্চনা করে আসছি। পাশেই মুসলমানদের মসজিদ থাকলেও আমাদের পূজার কোনো সমস্যা হয় না।

অপরদিকে, পুরান বাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজল মিয়া জানান, যখন মসজিদের আজান হয় তখন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বাদ্যযন্ত্র বন্ধ রাখেন। নামাজ শেষ হলে আবার তারা তাদের পূজা শুরু করেন। এই নিয়মে যুগ যুগ ধরে আমরা আমাদের ধর্ম পালন করে আসছি। আজ পর্যন্ত এখানে হিন্দু-মুসলমানের ধর্ম পালনে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। আমরা যার যার ধর্ম পালন করে আসছি।

পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র বর্মনণ জানান, এবার জেলায় মোট ৪৩২টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব উদযাপন করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, এক উঠানে পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির অবস্থিত। এটিই এখানকার মানুষ বিশ্বাস করে- ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’