মসজিদে বন্দুক হামলা থেকে রক্ষা পেলেও টাইগাররা মর্মাহত

নিউজিল্যান্ডের একটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে ৯ থেকে ২৭ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে। ২৮ বছর বয়সী হামলাকারী যুবক একজন অস্ট্রেলীয়।

হামলার সময় বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দল মসজিদটিতে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা নিরাপদে সরে আসতে সক্ষম হয়েছেন। নিউজিল্যান্ড সফরে যেখানে তাদের শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা, তার কাছেই মসজিদটির অবস্থান।-খবর মেইল অনলাইন ও এএফপির।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, বন্দুক হামলার পর নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সব সদস্য নিরাপদে হোটেলে ফিরে এসেছেন। খেলোয়াড় ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বিসিবি অব্যাহত যোগাযোগ রাখছে।

হামলায় কতজন নিহত হয়েছেন, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মুখপাত্র বলেছেন, ক্রিকেট দলের সদস্যরা নিরাপদে রয়েছেন। তবে তারা মানসিকভাবে আহত হয়েছেন। আমরা তাদের হোটেলের ভেতরেই থাকতে বলেছি।

ওপেনিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল টুইটারে বলেছেন, গোলাগুলি থেকে পুরো ক্রিকেট দল নিরাপদে ফিরতে পেরেছেন। এ এক ভীতিপ্রদ অভিজ্ঞতা। দয়া করে সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

মুশফিকুর রহিম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে গোলাগুলি থেকে আল্লাহ আজ আমাদের রক্ষা করেছেন। আমরা সত্যিই খুব ভাগ্যবান। এমন ঘটনা আর দেখতে চাই না। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক মাজহার উদ্দিনও ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি বলেন, ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে যখন তারা উপস্থিত হন, তখন সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি চলছিল। সতর্ক করার পরেই হতবিহ্বল খেলোয়াড়রা বাসের ভেতর চলে যান এবং তারা ফ্লোরে শুয়ে পড়েন।

দেশটির সাউথ আইল্যান্ডে আল নূর মসজিদে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে অন্তত ৫০টি গুলি করা হয়েছে।

সামাজিকমাধ্যমে মসজিদের ভেতর থেকে গোলাগুলির লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করা হয়। স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে যখন এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, তখন শুক্রবারের জুমার নামাজ চলছিল।

পার্শ্ববর্তী লিনউড মসজিদেও হামলায় নিহতের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হামলার ঘটনাকে সংকটময় উল্লেখ করে স্থানীয়দের ঘরের ভেতর থাকতে অনুরোধ করেছে পুলিশ।

ডেইলি মেইল অস্ট্রেলিয়ার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদের ভেতরে যখন এক ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি করছে, যখন মুসল্লিরা সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হলেও তিনিই বন্দুকধারী কিনা- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আল নূর মসজিদে যখন এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনা ঘটছে, তখন বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দল মসজিদের ভেতরেই ছিল।

দিনটিকে অন্ধকারাচ্ছন্ন আখ্যায়িত করে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্দা আরডান বলেন, হতাহতদের পরিবারের প্রতি আমিসহ নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের সমবেদনা রয়েছে।

গোলাগুলির সময় এক ব্যক্তি পালিয়ে যেতে যেতে বলছেন, ফুটপাতে আমার স্ত্রীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছি। আমার স্ত্রী নিহত হয়েছে। এ সময় তিনি চিৎকার করে কান্না করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আহমাদ আল মাহমুদ বলেন, হামলাকারীদের একজন ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। উজ্জ্বল চুলের ওই যুবক হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরেছিলেন।

মসজিদের কয়েকশ লোক যখন নামাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তখনই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। মসজিদটিতে ৩০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন।