মাংস আমদানি হলে শিল্প ধ্বংস হবে

বিদেশ থেকে গবাদি পশুর মাংস আমদানি করা হলে দেশের চামড়া শিল্প, খামারি এবং মাংস ব্যবসায়ীরা ধ্বংস হয়ে যাবে বলে দাবি করেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতি। রোববার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে সমিতির পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে।

‘গরুর হাটের চাঁদাবাজি, ভারতীয় মাংস আমদানি বন্ধ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা অপসারণের’ দাবিতে মাংস ব্যবসায়ীরা সংবাদ সম্মেলন করে। সমিতির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব রবিউল আলম সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

রবিউল আলম বলেন, ‘গত ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে হিমায়িত মাংস আমদানি করা হয়েছে। ভারতে যে মাংস ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেটাও এখানে এনে আমাদের মতো একই দামেই বিক্রি হচ্ছে। সুতরাং এটার আসলে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। মাংস আমদানি করা হলে দেশের চামড়া শিল্প, খামারি এবং মাংস ব্যবসায়ীরা ধ্বংস হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনায় বসুক। গরুর হাটের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে উদ্যোগ নেয়া হোক। ভারতীয় মাংস আমদানি বন্ধ করবে এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তাকে অপসারণ করতে হবে। এ কর্মকর্তারা টাকার জোরে এমন ক্ষমতাশীল হয়ে উঠেছে যে সরকারের সিদ্ধান্তকে পর্যন্ত তোয়াক্কা করছে না। ১০০ টাকার খাজনা সে আদায় করছে ৫-৭ হাজার টাকা। ছুরি ঠেকিয়ে এ টাকাটা আদায় করছে। কিন্তু আমরা এর কোনো বিচার পাচ্ছি না।’

চাঁদাবাজি বন্ধ হলে সারা দেশে ৪৫০ টাকার মধ্যে মাংস বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেন। পাশাপাশি মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা থেকে বৈধ পথে গরু আমদানির সুযোগ দিলে মাংসের দাম ২৫০ টাকার বেশি হবে না বলেও দাবি করেন তারা। রবিউল আলম বলেন, ‘এটা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে আমরা অবৈধভাবেই গরু আমদানি করছি। কিন্তু সেটা একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসে নিলাম হচ্ছে। যেখানে সরকার প্রতি গরুতে ৫২০ টাকা করে পাচ্ছে। কিন্তু সীমান্তে প্রতিটি গরুর জন্য ৩০-৩৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। সুতরাং বৈধ পথে গরু আমদানি হোক এটা আমরা চাই।’

সম্প্রতি ভারত থেকে গরুর মাংস আমদানির জন্য কিছু ব্যবসায়ীর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। মাংস ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার দেশে গবাদি পশু পালনে ২০০ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। ফলে খামারিরা উৎসাহিত হচ্ছে। এ সময়ে দেশে পশুর মাংস আমদানি করা হলে, এসব খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি চামড়া, হাড়, শিং সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এক পর্যায় বন্ধ হয়ে যাবে।