মাকে মিষ্টি খাওয়ানোর ‘অপরাধে’ বৃদ্ধ বাবাকে বেধড়ক চড়-থাপ্পড়!

দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীতে মা-কে মিষ্টি খাইয়েছেন বাবা মানিকলাল বিশ্বাস(৮০)। আর এই ‘অপরাধে’ বৃদ্ধ বাবাকে বেধড়ক চড়-থাপ্পড় দিয়ে এখন কারাগারে ছেলে। সুগারের রোগী মাকে মিষ্টি খাওয়ানোর কারণে সে এ কাণ্ড করে। এ ঘটনায় প্রতিবেশির মোবাইল ফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বুধবার বাসা থেকে বৃদ্ধের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

ঘটনাটি ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের। প্রদীপ বিশ্বাস অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভায় কর্মরত।

ভারতের সংবাদ প্রতিদিনি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিজয়া দশমীর দিন স্ত্রী আচমকাই স্বামীকে প্রণাম করেন। ঘরেই রাখা ছিল মিষ্টির প্লেট। মানিকলাল বিশ্বাস(৮০) সেই প্লেট থেকে একটা মিষ্টি তুলে স্ত্রীকে খাইয়ে দেন। ঘটনার সময় ছেলে প্রদীপ বাড়িতে ছিল না। তবে বাড়ি ফিরতে না ফিরতেই খবরটি তার কানে যায়। রীতিমতো মারমুখী হয়ে বাবাকে ডাকে সে। কেন সুগারের রোগী মা-কে মিষ্টি খাইয়েছে জিজ্ঞাসা করেন।

ছেলের মুখচোখ দেখেই ভয় পেয়ে যান বৃদ্ধ বাবা। কোনওরকমে একটা মিষ্টি খাওয়ানোর কথা স্বীকার করেন। সঙ্গেসঙ্গেই বৃদ্ধ বাবাকে থাপ্পড় মারতে শুরু করে ছেলে। একের পর এক থাপ্পড় ও ধাক্কা।

ছেলের হাতে মার খাওয়ার ঘটনায় হতবাক বাবা দেওয়াল ধরে নিজেকে সামলান। তাতেও ছেলের হাত থামেনি। এক নাগাড়ে চলতে থাকে চড়-থাপ্পড়।

প্রতিবেশী এক ব্যক্তি এই চড়-থাপ্পড়ের দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন। অশীতিরপর বাবাকে মারছে ছেলে। এই ভিডিও ভাইরাল হতে সময় নেয়নি। খুব শিগগির বারাসতের পুলিশকর্তাদের নজরেও চলে আসে মারধরের ভিডিও।

বুধবার দিন বারসত থানা থেকে একটি দল অশোকনগরে মানিকলালবাবুর বাড়িতে যায়। পুলিশকর্তারা ওই দম্পতির সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশকে দেখেই ভরসা পান বৃদ্ধ। নিজের মুখেই জানান, ছেলের অত্যাচারে কাঁটা হয়ে থাকেন তিনি। অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই বাবাকে এরকম মারধর করেন ছেলে। একপ্রকার আতঙ্কেই দিন কাটে বৃদ্ধের। পান থেকে চুন খসলেই শুরু হয় মারধর। এরপর পুলিশের কাছে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পরে বাড়ি থেকেই অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।